বাংলাদেশকে জঙ্গিদের অভয়ারণ্য বানিয়ে পুনরায় ভিক্ষুক রাষ্ট্রে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রহসনের মামলায় বিচার ও আইন-আদালত ব্যবহার করে বিরোধীদের দমনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস ৭৩ স্ট্রিটস্থ ৩৭-১৫”মামাস রেস্টুরেন্টে এর আয়োজন করে জেনোসাইড ’৭১ ফাউন্ডেশন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সোস্যাল মিডিয়া ও রাজপথে সরব ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার। সংবাদ সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন জেনোসাইড ‘৭১ ফাউন্ডেশন ইউএসএ সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ডঃ প্রদীপ রঞ্জন কর।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন যুক্তরাস্ট্র আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শাহ মোঃ বখতিয়ার। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ পশ্চিম শাখার সভাপতি ডাঃ রবি আলম।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা ও সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুর রহমান চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুমানা আকতার, এডভোকেট মোঃ আলী বাবুল, এডভোকেট জাকির এইচ মিয়া, এডভোকেট মুরশেদা জামান, আওয়ামী লীগনেতা টি.মোল্লা, সাংবাদিক পলাস নন্দী, ছাএলীগ নেতা হৃদয় মিয়াসহ আরো অনেকে।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টের কথিত অভ্যুত্থানের পর বেআইনিভাবে ক্ষমতায় বসা গোষ্ঠী আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক ও শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার প্রহসন সাজাচ্ছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ বিকৃত করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার যে নীলনকশা চলছে—তা জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
সোস্যাল মিডিয়া ও রাজপথে সরব ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার বলেন, “১৯৭৩ সালের আইন কেবল ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য। আজ যা করা হচ্ছে তা বিচার নয়, এক নিছক প্রহসন। ইউনূসের অবৈধ সরকারের অধীনে এই আইনের কোনো বৈধতা নেই। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনেই এ প্রহসন রুখে দেওয়া হবে।”
তিনি জানান, জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনার ভল্কার তুর্কের নেতৃত্বে কথিত অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, সেটি আসলে ইউনূসের দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের অংশ। এর প্রতিবাদে দায়িত্ব পালনকারী শতশত কর্মকর্তার সাক্ষ্য-ভিত্তিক দুই শতাধিক পৃষ্ঠার প্রতিবেদন ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে, যা জেনিভা, ব্রাসেলস ও লন্ডনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে এবং এর কপি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন কংগ্রেসসহ আন্তর্জাতিক মহলে পাঠানো হচ্ছে।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ড. প্রদীপ কর বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ একটি বিশেষায়িত আইন, যার সীমা শুধু ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধ পর্যন্ত। অথচ বর্তমানের বেআইনী প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জাতিকে বিভ্রান্ত করে নতুন হত্যাকাণ্ডকে এই আইনের আওতায় ফেলার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। এতে মূল লক্ষ্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের দমন।”
তিনি আরো বলেন, “এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হলে যত দ্রুত সম্ভব ইউনূসকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। প্রবাসীদের ঐক্যই এ লড়াইয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি।”
সংবাদ সম্মেলন শেষে ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ করের এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং সভাপতি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।