ইন্দোনেশিয়ার জাভায় একটি আবাসিক স্কুলে ভবন ধসে বহু মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধারকর্মীদের ধারণা ধ্বংসস্তূপের নিচে বেশ কয়েকজন চাপা পড়ে আছেন।
আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যম জানায় গত সোমবার আবাসিক স্কুলটির একটি বহুতল ভবনের একাংশ হঠাৎ ধসে পড়ে। ভবনের যে অংশটি ধসে পড়ে, সেখানে কয়েক শ কিশোর শিক্ষার্থী বিকেলের নামাজ পড়ার জন্য জড়ো হয়েছিলেন। বহুতল ভবনটির ওপরে নির্মাণকাজ চলছিল।
দেশটির জাতীয় তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থার অপারেশন ডিরেক্টর ইয়ুধি ব্রামান্ত্যো এক বিবৃতিতে বলেন, রোববার সকাল পর্যন্ত ১৪১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এখনো ২৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই কিশোর, যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে বলে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ১৬ ছিল। এখন পর্যন্ত যেসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি দেহাংশ রয়েছে। উদ্ধারকারীরা আজ ধ্বংসস্তূপ থেকে ওই দেহাংশ উদ্ধার করেন বলে জানান ইয়ুধি। আজ সকাল পর্যন্ত ৬০ শতাংশ উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।স্থানীয় তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা থেকেও এক বিবৃতিতে আজ পর্যন্ত ৩৭টি মরদেহ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে।
কী কারণে ভবনটি ধসে পড়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রাথমিকভাবে পাওয়া সূত্রে তাঁদের মনে হচ্ছে, নিম্নমানের নির্মাণকাজই ভবনটি ধসে পড়ার কারণ। ভবনের ধসে পড়া অংশ সরাতে গেলে অন্যান্য অংশে কাঁপুনি হচ্ছে। এ কারণে সতর্কতার সঙ্গে উদ্ধার অভিযান চালাতে হচ্ছে, এ কারণে সময় বেশি লাগছে।
সোমবার ভবন ধসের পর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টাকে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ ধরা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সে সময় শেষ হয়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নিয়ে পরদিন শুক্রবার থেকে ধ্বংসস্তূপ সরাতে ভারী যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়।
কিন্তু নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারগুলো বৃহস্পতিবার ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সম্মতি জানায়। কারণ, এরই মধ্যে টানা ৭২ ঘণ্টার ‘গোল্ডেন আওয়ার’ শেষ হয়ে যায়। এই ‘গোল্ডেন আওয়ারে’বেঁচে থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। আগামীকাল সোমবারের মধ্যে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।