ভিয়েতনামে তাণ্ডব চালিয়েছে টাইফুন ‘বুয়ালোই’। এতে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১১ জনের। এখনও নিখোঁজ ১৭ জন। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে দেশটির উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ হাতিনে আঘাত হানে টাইফুনটি।
এ সময়, প্রবল বাতাসে উপড়ে যায় গাছপালা, ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রদেশটির বেশ কিছু অংশে এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সেবা।
এর আগে, বুয়াইলোইয়ের প্রভাবে রবিবার থেকেই তীব্র বাতাস আর ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয় উপকূলীয় এলাকায়। এতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় অনেক জায়গায়।
এর আগে দেশটি জানিয়েছিল, রবিবার টাইফুন বুয়ালোই দেশের ইস্পাত উৎপাদনকারী কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আঘাত হানার পর উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যৌথ টাইফুন সতর্কীকরণ কেন্দ্রের মতে, এই ঝড়টি – এই বছর ভিয়েতনামে আঘাত হানা দশম ঝড়। রাত ১০টার পরে স্থলভাগে আঘাত হানে ঝড়টি। যার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার (৮০ মাইল প্রতি ঘণ্টা)।
ভিয়েতনামের দুর্যোগ ও বাঁধ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে, নিন বিন থেকে কোয়াং নাগাই পর্যন্ত প্রদেশ এবং শহরগুলি থেকে ২৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরো চারজন নিখোঁজ রয়েছেন। ইস্পাত উৎপাদনের মূল কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হা তিনের ১৫ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে স্কুল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে স্থানান্তরের জন্য নির্ধারিত করা হয়ে।
প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার সামরিক কর্মীকে একত্রিত করা হয়েছে।
চারটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং টাইফুনের পথে থাকা সমস্ত মাছ ধরার নৌকাগুলোকে বন্দরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝড়গুলো আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের মতে, ভিয়েতনামে ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে আঘাত হানা টাইফুন ইয়াগির ফলে ৩.৩ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে এবং শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।