যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ‘চার্চ অব জিসাস ক্রাইস্ট অব ল্যাটার-ডে সেইন্টস’ গির্জায় এক বন্দুকধারী গুলি চালিয়ে অন্তত চারজনকে হত্যা করেছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও আটজন। আজ রোববার ওই গির্জায় প্রার্থনা চলাকালে গুলির এ ঘটনা ঘটে। পরে হামলাকারী গির্জাটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ অভিযুক্তকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

মিশিগানের পুলিশ প্রধান উইলিয়াম রেনি সাংবাদিকদের জানান, গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক টাউনশিপে (ডেট্রয়েট শহর থেকে প্রায় ৫০ মাইল উত্তরে) শত শত মানুষ গির্জায় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি একটি চার-দরজা বিশিষ্ট পিকআপ ভ্যান গির্জার মূল দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে গুলি চালানো শুরু করে। এক পর্যায়ে বন্দুকধারী গির্জায় আগুন লাগিয়ে দেয়।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য রোববার বিশেষ পবিত্র দিন। ধর্মবিশ্বাসী খ্রিস্টানরা এদিন চার্চে প্রার্থনায় অংশ নেন। এই সামষ্টিক বা গণ-প্রার্থনাকে বলা হয় ‘মাস’।

অন্যান্য রোববারের মতো গতকালও ওই গির্জায় ‘মাস’ এর প্রস্তুতি চলছিল, শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন সে সময়। আকস্মিক বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে চার্চের ভেতর ঢুকে পড়ে হত্যাকারী এবং অ্যাসল্ট রাইফেল হাতে নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে। হামলার পর সেই গির্জা ভবন থেকে সরে যান তিনি।

হত্যাকারীর পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। তার নাম থমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড (৪০), জন্ম ও বেড়ে ওঠা মিশিগানের বার্টন শহরে। মার্কিন সেনাবাহিনীর মেরিন শাখার সদস্য হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইরাকে ছিলেন তিনি।

হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৪ জন এবং আহত হন ৮ জন। পুলিশ অবশ্য প্রাথমিক অবস্থায় ২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল। পরে চার্চের অভ্যন্তরে আরও দুজনের মরদেহের সন্ধান মেলে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গ্র্যান্ড ব্ল্যাংক শহরের পুলিশপ্রধান উইলিয়াম রেনি জানিয়েছেন, হামলা ঘটার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ওই গির্জার চত্বরে ছুটে যান দুজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং তাদের গুলিতে চার্চের পার্কিং লটের কাছে নিহত হন স্যানফোর্ড।

ঠিক কী কারণে স্যানফোর্ড এই হামলা করলেন, তা এখনও জানা যায়নি। হত্যার মোটিভ জানতে তার বাসস্থান ও ফোন রেকর্ড দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেনি।

প্রসঙ্গত, এই হামলার মাত্র ১৪ ঘণ্টা আগে পার্শ্ববর্তী অঙ্গরাজ্য নর্থ ক্যারোলাইনার সাউথপোর্ট শহরে একটি পানশালায় এমন একটি বন্দুক হামলা ঘটে। এতে নিহত হন অন্তত ৩ জন এবং আহত হন ৫ জন।