আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি, তাদের নিবন্ধনও স্থগিত করা হয়নি। শুধুমাত্র দলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে জিটিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক মেহদি হাসানের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়।

নিচে সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ অনুবাদ তুলে ধরা হলো:

মেহদি হাসান : আপনার এবং আমার শেষবার কথা হওয়ার পর অনেক কিছু ঘটে গেছে। আমার মনে হয় আমরা শেষ কথা বলেছিলাম ২০১৭ সালে। তখন আপনি একজন সাধারণ নাগরিক ছিলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ, কিন্তু কোনো দেশ পরিচালনা করছিলেন না। এক বছরের কিছু আগে, বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দুই দশক ধরে তিনি আপনার দেশে কার্যত একজন স্বৈরশাসক ছিলেন এবং একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। অনেকে তাকে বিদায় নিতে দেখে খুশি হয়েছিলেন। তার সরকারের পতনে আপনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল? সেই দিন, সেই রাতের আপনার স্মৃতি কী? সেই রাতে আপনার কেমন অনুভূতি হয়েছিল? ভয়, আশা, নাকি বিস্ময়?

ড. ইউনূস: উত্তেজনা। উত্তেজনা। উত্তেজনা, হ্যাঁ অবশ্যই। অবশেষে এটা ঘটল। এটা দারুণ খবর ছিল!

মেহদি হাসান : আপনি কি ভেবেছিলেন এটা ঘটবে?

ড. ইউনূস: না, এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। কিছু বিক্ষোভ চলছিল, যা বাংলাদেশে প্রায়শই দেখা যায়। কিন্তু এমন কিছু হবে, যা দেশটিকে বদলে দেবে—তা ভাবিনি। দেশের পরিস্থিতি তখন খুবই খারাপ ছিল। তখন তিনি চলে যাওয়ার আগে কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত আমি জানতাম না, কিন্তু তিনি চলে গেছেন—এই চূড়ান্ত খবরটি ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।

মেহদি হাসান : গত এক বছরে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? আপনারা সম্প্রতি বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ করলেন। এখন দেশের মেজাজ কেমন? এখনো কি আশাবাদ, উত্তেজনা, আশা জিইয়ে রাখা, নাকি পরিবর্তনের ধীর গতিতে হতাশা রয়েছে?

ড. ইউনূস: সবই, সবকিছুর মিশ্রণ। কোনো কিছু ঘটছে বলে উত্তেজনা আছে, আবার হতাশা তো আছেই। হতাশা এই কারণে যে মানুষ ফল নিয়ে অভিযোগ করতে পছন্দ করে। এটা সাধারণ ব্যাপার। তারা আরও বেশি চায়। প্রত্যাশার স্তর এত বেশি যে তারা সবকিছু এখনই চায়, কাল নয়। সুতরাং, যেহেতু এটি আজ ঘটছে না, তাই আপনি ভালো না—এই ধরনের ধারণা। তবে একটা ভালো ইঙ্গিত রয়েছে। এটি কোনো নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে না। এটি কেবল উচ্চ প্রত্যাশার ফল।

মেহদি হাসান : হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আপনাকে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকার পরিচালনার জন্য বেছে নিয়েছিল। আপনি কি এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন? আপনার কী মনে হয় তারা কেন আপনাকে বেছে নিয়েছিল—একজন অ-রাজনীতিক, একজন অর্থনীতিবিদ, এবং সম্মানের সঙ্গে বলছি, একজন ৮০-এর কোঠার মানুষকে কেন তারা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান, অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নিল?

ড. ইউনূস: আমি বিস্মিত হয়েছিলাম, কারণ আমি তাদের চিনি না। আমার কখনো তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আমার কখনো তাদের সঙ্গে কোনো কথোপকথন হয়নি। ওহ, দারুণ! এই বার্তাটি প্রথমে আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মাধ্যমে আসে যে ছাত্ররা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। তারা চায় আপনি দায়িত্ব নিন। আমি বলেছিলাম, তাদের উপেক্ষা করো। এই আলোচনায় জড়িও না। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে এটা হবে না। পরের দিন, তারা নিজেরাই সরাসরি আমার কাছে আসার চেষ্টা করে, কারণ আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে কাজ হচ্ছিল না। তাই তারা আমাকে ফোন করে, ব্যাখ্যা করে। আমি বলেছিলাম, ‘না, অন্য কাউকে খুঁজে নাও। আমি জড়াতে চাই না।’ এই আলোচনা, কথোপকথন—তিন দিন ধরে চলল। আমি দূরে থাকার চেষ্টা করছিলাম। আর তারা বারবার অনুরোধ করছিল।

মেহদি হাসান : তাহলে শেষ পর্যন্ত কী কারণে আপনি রাজি হলেন?

ড. ইউনূস: অবশেষে, তারা পরিস্থিতি বর্ণনা করল। দেখুন, ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, নিজেদের উৎসর্গ করেছে, শিশুরা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এবং এত কিছু ঘটেছে, আর তারা চাইছে আপনি আসুন। এসব উপেক্ষা করলে দেশের কী হবে? তারা খুব আবেগপ্রবণ ছিল। তারা আমাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছিল। অবশেষে আমি বললাম, ঠিক আছে, তোমরা যদি এত বড় ত্যাগ স্বীকার করে থাকো, তাহলে আমি আমার মন পরিবর্তন করব। আমি দেখব তোমাদের জন্য কী করতে পারি।

মেহদি হাসান : আপনি এই আত্মত্যাগ এবং রক্তপাতের কথা উল্লেখ করলেন। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ জানায়, গত গ্রীষ্মে ছাত্র বিক্ষোভের ওপর হাসিনার দমন-পীড়নের সময় আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন। বাংলাদেশ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে। আর আপনি আমার চেয়ে ভালো জানেন, তিনি এখন ভারতে পালিয়ে আছেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে জবাবদিহির মুখোমুখি করার জন্য আপনি বারবার অনুরোধ করেছেন। মোদী আপনার এই আহ্বান উপেক্ষা করায় আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আপনি কি মনে করেন ভারত কখনো হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে?

ড. ইউনূস: যদি তাদের নিজস্ব ইচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া হয়, অর্থাৎ তারা যদি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে সম্ভবত তারা তাকে নিজেদের কাছেই রাখবে। যদি কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে যা তারা এড়াতে পারবে না, তবে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।

মেহদি হাসান : তাকে নিজেদের কাছে রাখার পেছনে ভারতের স্বার্থ কী?

ড. ইউনূস: তারা তাকে সব সময় সমর্থন করে এসেছে। তারা এখনো আশা করছে, সম্ভবত যারা তাকে সমর্থন করে, তারা আশা করছে যে তিনি পূর্ণ গৌরব নিয়ে বিজয়ী নেতা হিসেবে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।

মেহদি হাসান : নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে যে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করছেন। এটা কি আপনাকে চিন্তিত করে যে ভারত তাকে ফিরিয়ে এনে আবার ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করবে?

ড. ইউনূস: আমি ঠিক সেই শব্দগুলো ব্যবহার করব না, তবে এটা সম্ভব যে কিছু বহিঃশক্তি তাঁকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে সাহায্য করবে। আমরা সব সময় এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ—

মেহদি হাসান: আপনি কি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন?

ড. ইউনূস: আমি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। খুব খোলাখুলিভাবে।

মেহদি হাসান: বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাঁকে ফেরত পাঠাতে বলায় তিনি কী বললেন?

ড. ইউনূস: দুটি বিষয়। প্রথমত, তাদের বলেছি, আপনারা তাঁকে রাখতে চান। আমি আপনাদের বলতে পারি না আপনারা তার সঙ্গে কী করবেন, তবে নিশ্চিত করুন তিনি যেন আমাদের নিয়ে কথা না বলেন। তিনি যেন বারবার বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে কথা না বলেন।

মেহদি হাসান: দুঃখিত, মোদী আপনাকে এটা বলেছেন?

ড. ইউনূস: আমি মোদীকে এই বিষয়ে বলেছিলাম যে দয়া করে নিশ্চিত করুন…

মেহদি হাসান: তিনি কী বললেন?

ড. ইউনূস: তিনি বললেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’

মেহদি হাসান: হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে, আপনার সরকার তাঁর দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে, তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে, যার ফলে কার্যত তাদের পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা তৈরি হয়েছে। আপনার সহকর্মী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেন, যাকে আপনি খুব ভালোভাবে চেনেন, তিনি লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে এটি কেবল পূর্ববর্তী সরকারের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে, যারা ক্ষমতায় এসে বিরোধীদের নিষিদ্ধ করেছিল। আপনি শুধু সেই চক্রের পুনরাবৃত্তি করছেন। অমর্ত্য সেন এবং অন্যদের এই সমালোচনার জবাবে আপনার কী বলার আছে?

ড. ইউনূস: এটি ভুল সমালোচনা, কারণ আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি।

মেহদি হাসান: মানে, আপনারা কি তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছেন?

ড. ইউনূস : না, নিবন্ধন নয়। কেবল তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

মেহদি হাসান : এর মানে কী?

ড. ইউনূস : এর মানে হলো তারা কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপ করতে পারবে না।

মেহদি হাসান : তাহলে আপনারা তো কার্যত…মানে, তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।

ড. ইউনূস : না, দলটি এখনো আছে।

মেহদি হাসান : তারা কি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে?

ড. ইউনূস : এখন নয়, কারণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ।

মেহদি হাসান : ঠিক আছে, তাহলে (আগের সরকারের) পুনরাবৃত্তি নিয়ে যে সতর্ক করা হয়েছিল, তা থেকে এটি কীভাবে ভিন্ন?

ড. ইউনূস: তারা একটি দল হিসেবে বৈধ রয়েছে। তবে আপাতত তাদের কার্যক্রম স্থগিত। আমি বলতে চাচ্ছি, যেকোনো সময় এটি উন্মুক্ত করা যেতে পারে।

মেহদি হাসান : আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনারা স্থগিত কার্যক্রম আবার শুরু করতে দিতে পারেন?

ড. ইউনূস : স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া যেতে পারে, এমন সম্ভাবনা আছে।

মেহদি হাসান: আপনারা দলটি নিষিদ্ধ করেননি। আপনারা শুধু বলেছেন যে আপাতত তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

ড. ইউনূস: ঠিক তাই।

মেহদি হাসান : কিন্তু একটি গোষ্ঠীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখা কীভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে?

ড. ইউনূস: এটি নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই দলের কার্যপ্রণালী দেখে এবং সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখেছে যে তারা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। তাই তারা মনে করেছে, এটা না করাই ভালো—

মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই অস্বীকার করবেন না যে বাংলাদেশে তাদের লাখ লাখ সমর্থক রয়েছে।

ড. ইউনূস : আমি লাখ লাখ বলব না। তাদের সমর্থক আছে, কিন্তু কতজন অবশিষ্ট আছে তা আমি জানি না, কারণ সমর্থক হলো এমন যে আপনি এতই শক্তিশালী, এই কারণেই আমি সব সময় আপনার কাছে যাই, কারণ আপনি ক্ষমতাশালী। আপনি হয়তো সমর্থকও নন।

মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি তো অস্বীকার করছেন না যে বাংলাদেশে তাদের একটি ভোটার গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের কোনো সমর্থন নেই?

ড. ইউনূস: নিশ্চয়ই। এটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।

মেহদি হাসান : কিন্তু এখন সেই মানুষদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই। আপনারা তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছেন। আমি বলছি, আপনারা তাদের দলকে রাজনীতিতে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছেন।

ড. ইউনূস: তারা ভোট দিতে পারে। ভোটার হিসেবে তারা বৈধ ভোটার। অনেক অংশগ্রহণকারী রয়েছে। তারা নিজেদের নেতা বেছে নেবে…

মেহদি হাসান : কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটা কি সহায়ক যে মানুষ বলবে, ‘নতুন সরকার পুরোনো সরকারের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, চক্রটি চলছেই?’

ড. ইউনূস: অন্যথায় আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এই দলটি, যদি তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকেও, তারা রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে না। তারা মানুষ হত্যা করেছে—সে বিষয়ে তারা কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেনি। তারা এই সময়ের মধ্যে যা করেছে, তার কোনো দায় নেয়নি। একটি শব্দও না। সব সময় অভিযোগ করছে যে অন্য কেউ এর জন্য দায়ী।

মেহদি হাসান : আমি নির্বাচনের প্রসঙ্গে একটু পরে ফিরতে চাই, কিন্তু তার আগে বাংলাদেশের বাইরে থেকে আসা কিছু সমালোচনা নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি আপনাকে এর জবাব দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই। গত নভেম্বরে, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু আপনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে জড়ো হয়েছিল, দাবি করা হয় যে তাদের সম্প্রদায়ের ওপর হাজার হাজার হামলা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করে বাংলাদেশের সহিংসতাকে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছিলেন, আমার মনে হয় তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে কী লাগবে, বা আপনার মতে এটি কি নিয়ন্ত্রণে আছে? আমরা এর মাত্রা নিয়ে কথা বলতে পারি।

ড. ইউনূস: প্রথমত, এগুলো ভুয়া খবর। আপনি এই ভুয়া খবরের ওপর ভিত্তি করে চলতে পারেন না।

মেহদি হাসান : আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা উদ্ধৃত করেছি, আর আপনি বলছেন ভুয়া খবর।

ড. ইউনূস: হ্যাঁ। ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো এমন কিছু বলেছেন কিনা, বা বাংলাদেশে এখন কী ঘটছে সে সম্পর্কে তাঁর কোনো জ্ঞান আছে কিনা।

মেহদি হাসান : আপনি বলছেন, এটি শুধু অতিরঞ্জিত নয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতাই হয়নি? এমনকি নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি ভাঙচুর, দলবদ্ধ সহিংসতা, এবং গত নভেম্বরে শুধু বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর হিন্দুত্ববাদী পতাকা উত্তোলনের জন্য একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা জানিয়েছে।

ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়, ভুয়া ও মিথ্যা খবরের ছড়াছড়ি।

মেহদি হাসান: না, আমি বুঝতে পারছি। সব ধরনের খবরই আসে। আমি বুঝতে পারছি, এটা অতিরঞ্জন। কিন্তু আমি জানতে চাচ্ছি, আপনি কি বলছেন যে কোনো হিন্দু-বিরোধী সহিংসতা নেই?

ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়।