জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

টানা পাঁচদিনের যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি- মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যবিশিষ্ট ট্রাইব্যুনাল প্যানেলে তিনি এ আবেদন জানান। একই সঙ্গে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের শাস্তির বিষয়টি আদালতের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেন রাষ্ট্রপক্ষের এই প্রধান প্রসিকিউটর।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন। একজন মানুষকে হত্যার দায়ে যদি একবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তবে ১ হাজার ৪০০ মানুষের হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে ১ হাজার ৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত। তবে আইন অনুযায়ী তা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, এই কারণে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আবেদন করছি। এ দণ্ড কার্যকর হলে দেশের জনগণ ন্যায়বিচার পাবে বলেও জানান তিনি।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, অপরাধীদের সম্পত্তি বিক্রি করে শহিদ ও আহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন করেছে প্রসিকিউশন। আগামী সোমবার এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। সেটি শেষ হলে মামলাটি রায়ের দিকে যাবে।

গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আন্দোলন দমনে ১ হাজার ৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’-এর মোট পাঁচ অভিযোগে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার ৫৪তম ও শেষ সাক্ষী ছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীর। গত ৬ অক্টোবর তার জেরা শেষ করেন আসামি পক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।