ভারতের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল লাদাখে জেনজির আন্দোলন শুরু হয়েছে। সেখানে বিক্ষোভ, সহিংসতা এবং আগুনের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিন ধরে এসব ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে গতকাল বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে লেহ শহর সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কিছু সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন।
জানা যায় সোনম ওয়াংচুকসহ ১৫ জন গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে চার দফা দাবিতে অনশন চালাচ্ছিলেন। তাদের দাবিগুলো হলো লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ চালু করা, লেহ ও কার্গিলের জন্য একটি পৃথক লোকসভা আসন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে দুই অনশনকারীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এরপর লাদাখ অ্যাপেক্স বডির (এলএবি) যুব শাখা আন্দোলনের ডাক দেয়। গতকাল বুধবার সকাল থেকে লেহ শহরে যুবকরা রাস্তা অবরোধ ও মিছিল শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বিজেপি সদরদপ্তর ও হিল কাউন্সিল অফিসে পাথর ছোঁড়ার পর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, জনতার সহিংসতার জবাবে তারা আত্মরক্ষায় গুলি চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও চারজন নিহত ও ৩০-এর বেশি পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন।
ঘটনার পর সোনম ওয়াংচুক অনশন ভঙ্গ করে যুবকদের সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা লাদাখে অস্থিরতা চাই না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই আমাদের পথ।’ তিনি জানান, এটি লাদাখের জন্য এবং তার জন্য অত্যন্ত দুঃখের দিন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, লাদাখের দাবিগুলো নিয়ে লেহ ও কার্গিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিছু দাবি ইতোমধ্যেই পূরণ হয়েছে। যেমন- সংরক্ষণ বৃদ্ধি, মেয়েদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ, ভোতি ও পুরগিতে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি। মন্ত্রণালয় বলেছে, সহিংসতার মূল কারণ কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যক্তি।
সংবাদকর্মী স্যমন্তক ঘোষ জানান, অনশনকারীর অসুস্থতার পর যুবদের একাংশ রাস্তায় নেমেছিল। তাই এটাকে আংশিকভাবে জেনজির আন্দোলন বলা যেতে পারে। তবে জাতীয় মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, মূলত এটি যুবদের উদ্যোগে আন্দোলন ছিল। স্থানীয় বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, সহিংসতার পেছনে কংগ্রেসের হাত থাকতে পারে।