চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকের পর দেশটির পণ্যের ওপর ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে তারা নিজ নিজ দেশের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমিত করতে আগামী এক বছরের জন্য বাণিজ্যসমঝোতায় পৌঁছেছেন। এর ফলে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তীব্র হয়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার উত্তাপ কিছুটা কমে এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালের পর এটি তাদের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। বৈঠক শেষে তারা এক বছরের জন্য বাণিজ্যযুদ্ধ ‘স্থগিত’ রাখার বিষয়ে সম্মত হন।
ট্রাম্প জানান, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে চীন-মার্কিন বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চুক্তির অংশ হিসেবে বিরল খনিজ সম্পর্কিত জটিল ইস্যুটিও সমাধান হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আগামী এপ্রিলে ট্রাম্প চীন সফরে যাবেন বলে জানিয়েছেন। এর পরবর্তী কোনো এক সময় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। বৈঠক শেষে ট্রাম্প মন্তব্য করেন, “বৈঠকটি ছিল অসাধারণ। আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বুসানে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিং। বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যাওয়ার আগমুহূর্তেই দুই নেতার মধ্যে হয়েছে সৌজন্যমূলক আলাপ, কূটনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন।
ট্রাম্পের সঙ্গে হাত মেলানোর সময় শি বলেন, “আপনাকে আবার দেখে খুবই ভালো লাগছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আপনার পুনর্র্নিবাচনের পর আমরা ফোনে তিনবার কথা বলেছি, একে অপরকে বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠিয়েছি এবং সবসময় ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছি।”
শি আরও বলেন, উভয় দেশকে দ্রুত ফলো-আপ কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে এই ঐকমত্য উভয় দেশের জনগণ এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির কাছে স্পষ্ট ফল বয়ে আনে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চুক্তির বিভিন্ন দিক নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, বিরল খনিজ রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ এক বছরের জন্য স্থগিত থাকবে। আর যুক্তরাষ্ট্র চীনা প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিত করেছে। উভয় দেশ বন্দর-সংক্রান্ত পারস্পরিক ফি আদায়ও স্থগিত রাখবে।












