বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগণের সরকার গঠন করতে চায়। দলটির প্রত্যাশা—সরকার আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিক।

শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি মহল একাত্তরকে ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু সেটি করার সুযোগ নেই। কারণ একাত্তরেই আমাদের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি তাতে একমত। তবে নির্বাচনের আগে আলাদাভাবে গণভোট আয়োজন সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় এবং নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার অপচেষ্টা মাত্র।

তিনি আরও বলেন, যদি গণভোট করতেই হয়, তবে তা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই হওয়া উচিত। সেদিন দুটি ব্যালট থাকবে— একটি সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য, অন্যটি গণভোটের জন্য।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, একটি মহল নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে এবং বিভিন্নভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

সংস্কারের পক্ষে দলের অবস্থান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি একটি সংস্কারপন্থী দল। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের ম্যান্ডেট পেলে অবশ্যই সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনব।

জুলাই জাতীয় সনদের সুপারিশমালা প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন ও অন্তর্র্বতী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। বিএনপি মতভেদ থাকা সত্ত্বেও মূল সনদে স্বাক্ষর করেছিল এবং ভিন্নমতের জন্য ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিল। কিন্তু সুপারিশমালায় কোনো রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত বা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এলে আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকা সংস্কারের বিষয়গুলো সংসদে পাস করে দেশের পরিবর্তন আনব।

মির্জা ফখরুল জানান, নির্বাচনে জয়ী হলে বিএনপি তাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শহীদ জিয়া দেশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখনই বাংলাদেশ রক্ষা পেয়েছিল। তিনিই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, গণমাধ্যমকে মুক্ত করেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির সূচনা করেন এবং গার্মেন্টস শিল্প ও বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রবাহের ভিত্তি তৈরি করেন।