নজরুল ইসলাম অরুণ পেশায় একজন চাল ব্যবসায়ী। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। শহরের বিহারি মোড়ে রয়েছে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাজীবনে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও পড়তে পারেননি। লেখাপড়া করেছেন মানবিকে।

ছোটবেলা থেকে তার শখ বিমান বানানো। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা না থাকলেও নজরুল তৈরি করেছেন বেশ কয়েকটি খেলনা বিমান। ব্যবসার পাশাপাশি অবসর সময়ে পড়ে থাকেন বিমানের খুটিনাটি যন্ত্রাংশ নিয়ে। বিশেষ করে বিমান বানানোর কাজ রাত ৮টার পর থেকে শুরু করে চলে ১১টা পর্যন্ত। অন্য সময় তিনি ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকেন।

জানা যায়, একটি বিমান বানাতে তিনি সময় নেন মাত্র ৩-৪ ঘণ্টা। প্রথমে তিনি একটি ছোট খেলনা বিমান তৈরি করে সেটি উড়াতে সক্ষম হন। এর পর একে একে বেশ কয়েকটি খেলনা বিমান তৈরি করে ফেলেন। তিনি এর মধ্যে তৈরি করেছেন যুদ্ধবিমান, ফাইটার বিমান, বোয়িং বিমান এবং হেলিকপ্টার। তিনি এ কাজে ব্যবহার করেছেন ককশিট। এ ছাড়া বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কিনে শখের বিমান তৈরি করছেন। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে তিনি বিমান নিয়ন্ত্রণ করেন। বাজার থেকে যন্ত্রাংশ কিনে এনে তিনি সেগুলো সেটিং করেন।

চালের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ছোট-বড় বিভিন্ন মডেলের বিমান বানিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া বিমান তৈরির সরঞ্জামও রেখে দিয়েছেন। ক্রেতা আসলে কাজ শেষ করে বিমান বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন।

এলাকাবাসী জানান, ব্যবসার ফাঁকে তিনি এগুলো তৈরি করেন। বুধবার ব্যবসায়িক ছুটির দিন তিনি বিভিন্ন মাঠে নিজের বানানো বিমান ওড়াতে যান। দোকানে কোনো ক্রেতা না থাকলে তিনি বিমান বানাতে বসে যান। বিমান বানানোই যেন তার ধ্যান-জ্ঞান।

স্থানীয় আব্দুর রহমান জানান, মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে তাকে বিমান বানানোর কাজ করতে দেখা যায়। অন্য কোথাও অবসর সময় না কাটিয়ে তিনি বিমান বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। মেধা ও পরিশ্রম করে তিনি এগুলো বানিয়ে যাচ্ছেন। গত প্রায় ৫ বছর ধরে তিনি বিমান বানাচ্ছেন।

চাল ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম অরুণ বলেন, ছোটবেলা থেকেই একটা শখ ছিল বিমান সম্পর্কে। বিমান কীভাবে ওড়ে, কীসের সাহায্যে উড়তে পারে এগুলো নিয়ে একসময় খুব ভাবতাম। বড় হওয়ার পরও বিমানের প্রতি সেই নেশাটা ছাড়েনি। ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন মডেলের বিমান তৈরি করি এবং সেটি সময়মতো উড়ানোর চেষ্টা করি। এগুলো করে মজা পাই। আরও বেশ কয়েকটি মডেলের বিমান তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান নজরুল।