বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যে বিবৃতি দিয়েছে, তার সঙ্গে সচিবরা একমত নন।
আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
বরিশালের ঘটনা নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কালকে একটা মিটিং ছিল, সেখানে আমি যখন কথা বলেছি, সচিব যারা ছিলেন বা অন্যান্য কর্মকর্তারা, তারা সবাই এই বিবৃতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।’
‘এই ল্যাংগুয়েজ, এটা হওয়া উচিত ছিল না। এটা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনেরও যারা ছিলেন, তারাও এগ্রি করছে। এ জাতীয় ল্যাংগুয়েজ ইউজ করাটা কোনো…’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়গুলো আমরা আবজার্ব করছি। এগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখছি, মিস কমিউনিকেশন থেকেই শুরু। ফিল্ড লেভেলের সবাইকে ইন্সট্রাকশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে, রেগুলারলি ইন্টারেকশন করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘যেখানে ইন্টারেকশন কম হয়, সেখানে এ ধরনের মিস কমিউনিকেশনের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এগুলো যাতে না ঘটে, তাদের বলা হয়েছে, আপনারা নিজেরা আগে বসেন, বসে দেখেন সলভ করা যায় কি না। যদি আপনারা নিজেরা সলভ করতে না পারেন, আইন তো আছেই। সবাই তো ফিল্ডে কাজ করছে। ইন্টারেকশন থাকতে হবে।’
গত বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে বরিশালে পুলিশ, আনসার ও স্থানীয় ছাত্রলীগ সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, ওই রাতে সদর উপজেলা ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলা চালান স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ইউনিয়ন, আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা দায়ের করেন সদর থানার ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান। অন্যটি করেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরির্দশক (এসআই) শাহজালাল মল্লিক। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে।
এর মধ্যে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে গ্রেফতারের দাবি জানায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)। বৃহস্পতিবার কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি সভা শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবির কথা জানায় তারা।
পরে গতকাল রোববার রাত সোয়া ৯টায় বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের বাসভবনে সমঝোতা হয়। বৈঠকে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার, পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ সরকারি কর্মকর্তারা ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা একটা সমাধানের পথে এসেছি। ইনশাল্লাহ মামলাগুলো প্রত্যাহার হয়ে যাবে। জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান সমঝোতা বৈঠকে ছিলেন না।
এর আগে রোববার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ঘটনাটি এখন বেশি মাত্রায় নেই, এটি সমাধানের দিকে চলে যাচ্ছে বলে আমি বিশ্বাস করি।