মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ালেন পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। কার নেতৃত্বে প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে এই নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান তারা।

একুশের প্রথম প্রহর সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টা ১ মিনিটে ঈশ্বরদী বাস টার্মিনালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌর মেয়র ইসাহক মালিথা ও ইউএনও পিএম ইমরুল কায়েসের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান আতিয়া ফেরদৌস কাকলিসহ পরিষদের কর্মকর্তা ও কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১২টার আগেই পৌরসভা নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ, পুলিশ বিভাগ, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান মিনারের পাদদেশে সমাবেত হয়। ১২টা ১ মিনিটে পৌর মেয়রের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য ঘোষণা দেওয়া হলে আপত্তি জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ক্ষোভে তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করা থেকে বিরত থাকেন। এরপর অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অর্পণ শেষ হলে তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

উপজেলা প্রশাসনের দাবি, রাষ্ট্রের পক্ষে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ফুল দেওয়া হবে। আর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিভুক্ত পৌরসভার মেয়রের অবস্থান ওপরে থাকায় তার নেতৃত্বেই পুষ্পস্তবক আগে অর্পণ করা হবে।

পৌর মেয়র ইসাহক আলী মালিথা বলেন, ২০২০ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিভুক্ত পৌর মেয়রের অবস্থান ২৫ নম্বরের প্রথমে। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান। এখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কোনো অবস্থান নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস বলেন, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত বিধায় আমরা রাষ্ট্রের বা রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি। উপজেলা পর্যায়ে রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে সব দিবসের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সি শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে আসন বিন্যাস বা বসার ক্ষেত্রে। যুগ্ম সচিব বা উপসচিব পদমর্যাদাসম্পন্ন হলেই কেউ ফুল নিয়ে সামনে যাবে। অন্য কোথায়ও এটা প্রযোজ্য নয়। এ বিষয়ে কিছু দিন আগেও আমাদের কাছে চিঠি এসেছে।