আজারবাইজানের বাকু বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ল’ বিভাগের ছাত্রী রিয়া ফেরদৌসি (৩৩) দুর্বৃত্তের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। সেখানকার পুলিশ হত্যার রহস্য গোপন করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করছেন তার পরিবার। তবে কী কারণে বা কারা হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি তার পরিবারের লোকজন।
এদিকে আজারবাইজানে বাংলাদেশি কনস্যুলেট নেই। সেই কারণে ইরানে অবস্থিত বাংলাদেশের কনস্যুলেট থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
নিহত শিক্ষার্থী রিয়া ফেরদৌসি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা সদরের কাঠালবাড়িয়া গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে। বুধবার ২৩ ফেব্রুয়ারি আজারবাইজান সময় সকাল ১০ টার দিকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত রিয়ার ভাই ফরমান আলী বলেন, টাকার সংকটের কারণে ঢাকার একটি কলেজ থেকে গত কয়েক বছর আগে সে অনার্স শেষ করেছে। এরপর ‘ল’ পড়তে গত বছর আজারবাইজানের বাকু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। লেখাপড়ার পাশাপাশি সেখানকার একটি রেস্টুরেন্টে পার্টটাইম চাকরি নেয়।
তিনি বলেন, সেখানকার লোক মারফত যতদূর শুনেছি ওই রেস্টুরেন্টে যাতায়াতের সময় স্থানীয় কিছু বখাটে যুবক তাকে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করত। তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় গত বুধবার সকালের দিকে রিয়াকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার হাত-পা ভাঙা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কিভাবে কারা বা কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা এই মুহূর্তে আমরা বলতে পারব না।
প্রতিবেশী আব্দুল্লাহ বলেন, রিয়ার বাবা আবু বক্কর খুবই নিরীহ মানুষ। তিনি গোখাদ্য (আউর) বিক্রি করে সংসার চালান। তাদের পরিবারে তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে রিয়া ছিল চতুর্থ। বাড়িতে অন্যান্য ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ায় মাধ্যমিক শেষ করতে না পারলেও রিয়া অনেক কষ্ট করে দেশে লেখাপড়া করে ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে যান। সেখানে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরবেন।
বাবা আবু বক্কর বলেন, অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চলে। ছোট থেকেই মেয়েটার একটা স্বপ্ন ছিল সে ব্যারিস্টার হবে। আর আমাদের সব কষ্ট দূর করবে! এখন তো সব শেষ।
তিনি বলেন, আমি গরিব মানুষ। খুনিকে শনাক্ত করা বা বিচার পাওয়ার কোনো আশা নেই। তাই সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাই, অন্তত মেয়ের লাশটা যেন দেশে এনে আমাদের কাছে পৌঁছে দেন।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, এখানকার একটি মেয়ে বিদেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে লোক মাধ্যমে এমন কথা শুনেছি। তবে এখনো পর্যন্ত প্রশাসনিকভাবে লিখিত কোনো তথ্য বা ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ আমাদের জানায়নি।