দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের প্রথম ব্যাচ গতকাল বুধবার রওনা হয়েছে। রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কোরিয়ান এয়ারের চার্টার্ড ফ্লাইটযোগে ৯২ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ান দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওই ৯২ জনসহ ২০২১-এর ডিসেম্বর থেকে এই পর্যন্ত ২০৩ জন সে দেশে গেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাসে বিদেশি কর্মী গ্রহণ স্থগিত করে। এরপর গত মাস থেকে প্রবাসীদের গ্রহণ করা আবার শুরু করে।
এবারে যাওয়া ৯২ জন শ্রমিকের মধ্যে ৪৪ জন কর্মী নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এবং বাকিরা পুনঃপ্রবেশ কর্মী। দক্ষিণ কোরিয়া ইপিএস (এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম) প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ থেকে মাঝারি ও নিম্ন-দক্ষ বিদেশি কর্মী গ্রহণ করে আসছে। তবে, অভূতপূর্ব এবং দীর্ঘায়িত কোভিড মহামারির কারণে দেশটির সরকার ইপিএস কর্মীদের গ্রহণ স্থগিত করেছিল।
প্রেরণকারী দেশগুলোর পাশাপাশি নিয়োগ কর্তাদের কাছ থেকে ক্রমাগত অনুরোধ মেনে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার সীমিত সুযোগে এবং পর্যায়ক্রমে কোয়ারেন্টিন ও কঠোর কোভিড সুরক্ষামূলক ব্যবস্থাসহ গত বছরের নভেম্বর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-গুন জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ইপিএস কর্মীরা দক্ষিণ কোরিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, যা শুধু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়, কোরিয়ান শিল্পে শ্রমশক্তি সরবরাহেও অবদান রেখেছে। তিনি বাংলাদেশের কর্মী প্রাপ্তির পুনঃপ্রবর্তনকে স্বাগত জানান এবং আশা করেন—দক্ষিণ কোরিয়া আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি ইপিএস কর্মীকে স্থান দিতে সক্ষম হবে।
এ পর্যন্ত ইপিএস পদ্ধতিতে ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের রেমিট্যান্সের প্রবাহ ২০২০-২১ অর্থবছরে ২০৯.১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল, যা দেশটিকে প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্সের ত্রয়োদশ প্রধান উৎস হিসেবে গণ্য করছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ১৭৭.৮৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১২তম স্থানে ছিল। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে রেমিট্যান্সের মাত্রা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৮০.৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৯৬.২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১১২.৫১ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়।