ইউক্রেনে রকেট হামলার শিকার হওয়া সেই জাহাজে থাকা সবাই আজ দেশে ফিরছে। যে যার মা-বাবার কোলে ফিরে গেছে। কিন্ত আমার বাবাই ফিরল না। আমার বাবা একাই পইড়া রইল বিদেশের ফ্রিজে। সরকার পারল না বাবার লাশটা আইনা দিতে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আক্ষেপ আর বুকভরা আর্তনাদ নিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নিহত বাংলাদেশি প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের মা আমেনা বেগম।
নিহত হাদিসুর রহমান আরিফ (৩৪) বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে। গত ২ মার্চ ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় প্রাণ হারান তিনি।
হাদিসুর রহমান আরিফের মা আমেনা বেগম সাংবাদিকদের আরও বলেন, সরকার যদি আগেই সবাইরে (ইউক্রেনে আটকে পড়া ক্রু) ফিরাইয়া আনত, তাহলে আমার বাপটারে মরা লাগত না। কষ্টে বুকটা ফাইট্টা যাইতাছে, সরকার কি এসব দেখে না! আমি আমার পোলার লাশটা চাই!
হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স বলেন, আমরা জানতাম আজ জীবিত নাবিকদের সঙ্গে ভাইয়ার লাশটাও দেশে আসবে। আমরা এয়ারপোর্টে অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু ভাইয়ার লাশটা আসল না। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে। কেউ নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিচ্ছে না। আমরা ভাইয়ার লাশ চাই।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২৯ জন নাবিক ও প্রকৌশলী নিয়ে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। এরপর ২ মার্চ রাতে জাহাজটি লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় রাশিয়ান সেনারা। এতে জাহাজে কর্মরত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফ নিহত হয়। পরে বাকি নাবিকদের নিরাপদে সড়িয়ে নেওয়া হয়।
ঘটনার ৬ দিন পর আজ বুধবার (৯ মার্চ) দুপুরে টার্কি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন বাংলার সমৃদ্ধির ২৮ জন স্টাফ । তবে নিহত হাদিসুরের মরদেহ দেশে আনতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।