গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান আইয়ুবের ছেলে মোহাম্মদ তায়িব (১৮)। বর্তমানে ইউক্রেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থী। সম্প্রতি রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করে অলোচনায় এসেছেন তায়িব। এদিকে তার মঙ্গল কামনায় দেশের বাড়িতে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করেছেন স্বজনেরা।
তায়িবের বাবা হাবিবুর রহমান আইয়ুব গাজীপুরের কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের পাবুর গ্রামের মৃত ছামিরউদ্দিন আকন্দের বড় ছেলে। তায়িবের চাচা মোহাম্মদ রাসেল ইতালি প্রবাসী। তিনি গত জানুয়ারিতে ছুটিতে দেশে আসেন। রাসেল জানান, বাবা এবং পরিবারের সদস্যরা যুদ্ধে না যাওয়ার অনুরোধ করলেও তায়িব তা শোনেনি।
শিক্ষার্থী তায়িবের দাদি নূরুন্নহার বলেন, নাতিনের জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে দোয়া করছি। নিরাপত্তাহীন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্যও কোরআন তেলাওয়াতসহ ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে প্রার্থনা করছি।
চাচা রাসেল আরও জানান, তিনি নিজেও দুই বছরের বেশি সময় ইউক্রেনে বসবাস করেছেন। বর্তমানে ইতালিতে আছেন। তারা তিন ভাই ও দুই বোন। তার বড় ভাই হাবিবুর রহমান আইয়ুব প্রায় ৩২ বছর আগে স্টুডেন্ট ভিসায় ইউক্রেন গিয়েছিলেন। পড়াশোনার ফাঁকে অবসর সময়ে কাজ করে অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই রাজধানী কিয়েভের নিপ্রস্কিতে তৈরি পোশাকের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন তিনি। প্রায় বিশ বছর আগে ওই দেশর পাসপোর্ট পেলে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন আইয়ুব। এ সময় ইউক্রেনের নাগরিক এলোনােকে বিয়ে করেন তিনি। পরে তাদের ঘরে মোহাম্মদ তায়িব (১৮) ও মোহাম্মদ কারীম (৮) নামে তাদের দুটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়।
তায়িবের ফুফু মরিয়ম তার ভাইয়ের বরাত দিয়ে জানান, তায়েব নিপ্রস্কি শহরের কিয়েভেস্কি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থী। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে তায়িব যুদ্ধ অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু তার পিতা মাতা তাতে রাজি ছিলেন না। এ কারণে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ থেকে স্বজনদের আমন্ত্রণ পাওয়ার পরেও ছেলের মায়ায় ইউক্রেন ছেড়ে যাননি তায়িবের বাবা-মা। খেয়ে না খেয়ে রাতের বেলা মাটির নিচের বাংকারে এবং দিনের বেলা কিছুটা নিরাপদ স্থানে আত্মগোপনে থেকে জীবন কাটাচ্ছেন তারা।