ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানের ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। বৃহস্পতিবার পশতু ভাষায় এক টুইট বার্তায় সংগঠনটির মুখপাত্র জাবিনুল্লাহ মুজাহিদ এই ঘোষণা দেন।
ওই টুইট বার্তায় জাবিনুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের ১০২তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানের ঘোষণা দেওয়া হলো।
এদিকে রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তালেবানের জ্যৈষ্ঠ নেতা ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি জানিয়েছেন, তালেবানের ক্ষমতা কাঠামো ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের শাসনের মতো থাকবে। ওই সময় তালেবানের শীর্ষ নেতা মোল্লা ওমর তালেবানের শরিয়াহ কাউন্সিল পরিচালনা করতেন।
তালেবানের সিদ্ধান্ত প্রণয়নকারীদের ঘনিষ্ঠ ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি বলেন, তালেবোনের সুপ্রিম নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দেশের সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন বলে আমরা মনে করছি।
তার মতে- তালেবানের শীর্ষ নেতা আখুন্দজাদার ভূমিকা হতে পারে প্রেসিডেন্টের ভূমিকা। তবে তিনি পর্দার আড়ালে থাকবেন আর আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হবেন তার একজন ডেপুটি।
তালেবানের শীর্ষ নেতার তিনজন ডেপুটি রয়েছেন। তারা হলেন মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা ইয়াকুব, হাক্কানি নেটওয়ার্কের সিরাজুদ্দিন হাক্কানি এবং কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক প্রধান মোল্লা আব্দুল গনি বারদার।
সোভিয়েত পতনের পর ১৯৯২ সালে কাবুলের দখল নেয় মুজাহিদিনরা। বুরহানুদ্দিন রব্বানি হন নতুন প্রেসিডেন্ট। রব্বানির সময় মুজাহিদিনদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ধীরে ধীরে কাবুলের দখল নেয় তালেবান। ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানে তালেবানের-শাসন শুরু হয়। তারা ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান ঘোষণা করে। কিন্তু এই রাষ্ট্র আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি।
আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলাকে কেন্দ্র ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে হানা দেয়। তারা তালেবান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে।
দীর্ঘ দুই দশক যুদ্ধের পর ২০২০ সালে কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র এবং তালেবান আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এক চুক্তিতে সই করে। যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ১৪ মাসের মধ্যে সব সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়।
গত মে মাসে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহার শুরু করে। এরপর তালেবান হামলা চালিয়ে একের পর এক এলাকা দখল করতে থাকে। গত রোববার তারা রাজধানী শহর কাবুল করে নেয়। এরপর বৃহস্পতিবার তারা ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান ঘোষণা দিল।