প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি যখনই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে, তখনই চক্রান্ত শুরু হয়। বাঙালির মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছেন, যেকোনও অর্জন তাদের কাছে ভালো মনে হয় না। তারা পরাধীনতার মধ্যে থাকতে চায়।

তিনি বলেন, ‘একটা শ্রেণি আছে, যারা আত্মমর্যাদা নিয়ে থাকতে চায় না। আত্মমর্যাদা বিকিয়ে দিয়ে তুষ্টি পায়। তারা এই অর্জনের কথা বলতেও যেন দ্বিধান্বিত। এরা কেন এরকম, সেটা আমার নিজের কাছেও প্রশ্ন।’

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ভাষা দিবসের আলোচনায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় ভাষার লড়াই, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্বীকৃতির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘যারা রক্ত দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা এই স্বীকৃতি পেয়েছি। এই মর্যাদা নিয়ে চলতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলতেন, বাংলাদেশের মাটি এত উর্বর, এতে ভালো ফল হয়, আগাছা-পরগাছাও হয়। আমরা স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। শিক্ষা-সংস্কৃতি চর্চায় বাঙালি বিশ্ববাসীর সামনে স্বমহিমায় গৌরবে মাথা উঁচু করে চলবে, এটাই চাই।’

বঙ্গবন্ধু বাংলাকে খুব ভালোভাবে জানতেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘৭০ এর নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন, মাত্র দুটো সিটে জিততে পারবো না। এটা বলতে পেরেছিলেন। ৭০ এর নির্বাচনে সেটি মিলেও গিয়েছিল। এরপর তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেন ঠিকই, কিন্তু তাঁকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। এরপর ৭ মার্চের ভাষণ। সেটি আজ প্রামাণ্য দলিলের স্বীকৃতি পেয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে নিয়ে আমাদের তিনি স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুললেন। তারপরেই ৭৫ এর ১৫ আগস্ট। এই ঘটনার পরপরই আমাদের সংস্কৃতির ওপর আঘাত আসে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নাম, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কথাও মুছে ফেলা হয়। কিন্তু জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ কেউ পারেওনি। বাঙালি মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে গেছে। সেটা দিয়ে গেছেন জাতির পিতা শেখ মুজিব। মনে রাখবেন, কোনও সংগ্রাম বৃথা যেতে পারে না।’’

সভা শেষে তিনি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘এখন থেকে বাংলাদেশ চিরজীবী হোক লাগবে না। জয় বাংলা স্লোগান দিলেই হবে।’ জোরে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে তিনি সভা শেষ করেন।