জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় গোপন নথিপত্র অনুমোদন ছাড়াই ফ্লোরিডায় নিজের বাড়িতে নিয়ে অরক্ষিত স্থানে ফেলে রাখার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

বিবিসির তথ্য মতে, গত শুক্রবার দায়ের করা ৩৭ দফা অভিযোগ-নামার মূল কথা হলো স্পর্শকাতর বিভিন্ন সরকারি নথি নিয়ে হেলাফেলা করে তিনি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলেছেন এবং এ ঘটনার তদন্তে তিনি বাধা দিয়েছেন।

তবে ট্রাম্প বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ নিতান্তই ‘হাস্যকর’ এবং ‘ভিত্তিহীন’। মার্কিন বিচার দপ্তর এবং কেন্দ্রীয় দপ্তরকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ এফবিআই ও বিচার দপ্তরের এসব অভিযোগ ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপের’ শামিল।

২০২৪ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। মনে করা হচ্ছে, প্রার্থী নির্বাচনের দৌড়ে তিনিই এগিয়ে রয়েছেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র, সামরিক পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর নথিপত্র তার ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোর বাড়িতে নিয়ে বাথরুম ও বলরুমের মতো অরক্ষিত জায়গায় রেখে দিয়েছিলেন।

এই প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার অপরাধের মামলা করছে।

তবে ট্রাম্প শনিবার বলেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি।জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনায় শনিবার ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ভাষণ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, ‘বন্দুক তাক করা এফবিআই এজেন্টরা’ মার-এ-লাগোতে তল্লাশি চালায়। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান দলের সম্মেলনে ভাষণে তিনি বলেন, ‘তারা প্রতারণা করছে, তারা প্রতারক, দুর্নীতিবাজ।

এসব অপরাধীকে কোনোভাবেই পুরস্কৃত করা যাবে না, তাদের হারাতে হবেই।’ট্রাম্প বলার চেষ্টা করেন, বাইডেন সরকার তাকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্তার চেষ্টা করেছে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই অভিযোগকে তিনি ‘দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ধাপ্পাবাজি’ বলে বর্ণনা করে বলেন, এসব অভিযোগ নেহাতই ‘পরিহাস’।

সভাগুলোতে আগত সমর্থকদের তিনি ‘দেশপ্রেমী’ বলে প্রশংসা করে বলেন, ‘অশুভ শক্তি’ এখন দেশ চালাচ্ছে। নিজের ক্ষমতাকালকে ‘সবচেয়ে সফল সময়’ বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানের ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক শক্তির মুখোমুখি দাঁড়াব…যে কাজ শুরু করেছি তা শেষ করব।

’ সে সময় মানুষজন ‘ইউএসএ, ইউএসএ’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি কখনোই নতি স্বীকার করব না, পিছু হটব না।’ তারা তার পেছনে লেগেছে উল্লেখ করে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এদের মধ্যে রয়েছে মার্ক্সবাদী, কমিউনিস্ট, কট্টরপন্থী পরিবেশবাদী’, আর সেসব মানুষ, যারা তার মতে আমেরিকার সীমান্ত খুলে দিতে চায়।

বিচার দপ্তরের নিয়োগ করা যে কৌঁসুলি তদন্তে নেতৃত্ব দেন, সেই জ্যাক স্মিথ জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ কাজ করেননি। ‘এ দেশে আইন একটাই এবং সবার জন্যই তা প্রযোজ্য।’

তিনি আরো বলেছেন, প্রতিরক্ষা বিষয়ক তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যেসব আইন রয়েছে সেগুলো অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে।