কক্সবাজারের রামুর পেঁচারদ্বীপ এলাকা থেকে অপহৃত অপর শিক্ষার্থীকেও উদ্ধার করেছেন র্যাব ১৫ এর সদস্যরা। শনিবার ভোরে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পেছনের পাহাড় থেকে মিজানুর রহমান নামের এই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে অপহৃত ৪ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খাইরুল ইসলাম। তিনি জানান, এ অভিযানে আটকদের কাছ থেকে অপহরণকারী চক্রের সদস্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার পর তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
শনিবার দুপুরে র্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক জানান, গত ৭ ডিসেম্বর সকালে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ এলাকা থেকে টেকনাফের সেন্টমার্টিন বেড়াতে নেওয়ার কথা বলে স্থানীয় চার স্কুলছাত্রকে অপহরণ করে জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামের দুই রোহিঙ্গা। পরে এসব শিক্ষার্থীকে টেকনাফের ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অজ্ঞাত স্থানে জিন্মি করে মোবাইল ফোনে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ ২০ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল অপহরণকারী চক্র। মুক্তিপণের টাকার দাবিতে অপহৃত স্কুলছাত্রদের ওপর নির্যাতন চালায় অপহরণকারীরা। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পর থেকে র্যাব অভিযান শুরু করে।
লে. কর্নেল খাইরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকায় র্যাব এ অভিযান শুরু করে। প্রথমে একজনকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণে জড়িত ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এসময় অপহৃত ২ শিক্ষার্থী ছাড়া পেয়ে পালিয়ে এপিবিএনের কার্যালয়ে আশ্রয় নেয়।
শুক্রবার উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থী রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম মামুন, একই এলাকার মোহাম্মদ আলমের ছেলে মিজানুর রহমান নয়ন ও আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ কায়সার। শনিবার ভোরে উদ্ধার করা অপর শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান।
এর আগে জড়িত সন্দেহে এপিবিএন পুলিশ সদস্যরা আটক করেন টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ-ব্লকের বাসিন্দা নজির আহাম্মদের ছেলে নুর সালাম (৫০) ও নুর সালামের মেয়ে রনজন বিবি (১৩) এবং একই ক্যাম্পের মোচনী পাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে সাদ্দাম মিয়া। এরা সকলেই ইব্রাহিমের স্বজন।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও মো. জাবেদকে আটক করে র্যাব।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা জানান, জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম টেকনাফের ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। এই দুই রোহিঙ্গা রামুর পেঁচারদ্বীপ এলাকায় বাতিঘর নামের একটি আবাসিক কটেজের কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাদে জাহাঙ্গীর আলম ও মো. ইব্রাহীমের সঙ্গে স্থানীয় চার শিক্ষার্থীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাদের অপহরণ করে নির্যাতন চালানো হয়।