জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলেও এগিয়ে আসেনি পুলিশ। এমনই অভিযোগ করেছেন ধর্ষণের শিকার এক নারী পর্যটক। পরে তিনি অভিযোগটি র্যাবকে জানান।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম জানান, এটি যদি প্রমাণিত হয় ও পুলিশ সদস্যদের অবহেলা থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে শিশু সন্তান নিয়ে কক্সবাজার পৌঁছান এই দম্পতি । সন্ধ্যায় সমুদ্র সৈকত থেকে উঠে শপিং মলে ভিড়ের মাঝে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তের সঙ্গে ধাক্কা লাগে স্বামীর। পরে তাদের কাছে ক্ষমাও চান তার স্বামী। কিন্তু কৌশলে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া বাধায় দুর্বৃত্তরা।
এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি করে স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামী-সন্তানকে আলাদা করে ফেলে। পরে স্ত্রীকে ছুরি দেখিয়ে সিএনজি করে নিয়ে যায় শহরের একটি নির্জন স্থানে। সেখানে তিনজন মিলে ধর্ষণ করে গৃহবধূকে। দ্বিতীয় দফায় জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে আবারও ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যায় ধর্ষকরা। পরে জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে ডেকে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন ওই নারী। তারপর ফোন দেন ৯৯৯-এ।
ওই নারীর অভিযোগ, ৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তার নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি আমি তাকে বলি। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন। এতে আমি আরও দুর্বল হয়ে পড়ি। আমার মনোবল হারিয়ে পড়ছিল প্রায়। কান্নার এক পর্যায়ে আমার চোখ হোটেল-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ডের দিকে যায়। সেখান থেকে র্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে জরুরি সেবার জন্য ফোন দিলে তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ার কথা ছিল, সেটা আমি পাইনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি দেখছি। কারও গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম জানান, জুরুরি সেবা ৯৯৯-এ সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম মাঠে থাকে। আমরা সব সময় কল পেলে ঘটনা স্থলে গিয়ে সহোযোগিতা করে থাকি। তবে এই ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, ইতোমধ্যে আমরা একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। আর দুইজনকে আটকের চেষ্টা চলছে।