দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর শর্তসাপেক্ষে কাল ১ সেপ্টেম্বর বুধবার থেকে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। সম্প্রতি বন বিভাগ ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বন কর্মকর্তারা জানান, ভ্রমণের সময় সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং নৌযান থেকে একসঙ্গে ২৫ জনের বেশি বনে নামা যাবে না।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ খুলনার বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, সর্বোচ্চ ৭৫ জন পর্যটক নিয়ে একটা লঞ্চ সুন্দরবনে যেতে পারবে। আগের মতো ২০০, ৩০০ জন নিয়ে যাওয়া যাবে না। সুন্দরবনের কটকা, কচিখালিতে বনে নামলে সামাজিক দূরত্ব মেনে প্রতি ২৫ জনকে সঙ্গে একজন গাইড নিয়ে নামতে হবে। যদি লঞ্চে ৫০ জন পর্যটক থাকেন, তাহলে দুজন গাইড থাকতে হবে। ২৫ জনের একটি দল নৌকায় করে সুন্দরবনে নামবে। পরে বাকি ২৫ জনকে নিয়ে আরেকজন গাইড নামবে।
পর্যটক যখন লঞ্চে উঠবেন তখন তার শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। সুন্দরবনে যখন নামবে তাদের মুখে মাস্ক থাকবে। মাস্ক ছাড়া সুন্দরবনে নামতে পারবে না। জানা যায়, খুলনায় রবিবার বনবিভাগ ও ট্যুর অপারেটরদের মধ্যে বৈঠকে সুন্দরবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে এসব শর্ত দেওয়া হয়। যদি কেউ শর্ত না মানে সেই কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
তবে এসব শর্ত মেনেও সুন্দরবন উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্তে খুশি পর্যটক ও ট্যুর অপারেটর কোম্পানিগুলো। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক মো. মাজাহারুল ইসলাম কচি সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ সময় সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে অনুমতি না থাকায় ট্যুর কোম্পানিগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন সুন্দরবন উন্মুুক্ত করায় কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে খুলনার ৪নং ঘাট এলাকা ও আঠারবেকি নদীতে থাকা ট্যুর জাহাজগুলোকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে। পর্যটন স্পটগুলো পরিষ্কার কাজে ব্যস্ত রয়েছে কর্মচারীরা।
জানা যায়, খুলনায় অ্যাসোসিয়েশনের তালিকাভুক্ত মোট ৬৪টি ট্যুর অপারেট কোম্পানি আছে। এর বাইরে খুলনা, মোংলা, মুন্সিগঞ্জে আরও ৫০টির মতো ট্যুর কোম্পানি আছে। উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতে গত ৩ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ রাখা হয়। এতে বিগত পাঁচ মাসে বনবিভাগ প্রায় ২০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় অবশেষে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন উন্মুুক্ত করা হয়েছে।