রাশিয়ার ঘোর আপত্তি উপেক্ষা করে কৃষ্ণ সাগর এবং দক্ষিণ ইউক্রেইনে বড় ধরনের সামরিক মহড়ায় নামছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেইন। সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে এ মহড়া। এতে ৩০টিরও বেশি দেশ অংশ নিচ্ছে। ‘সী ব্রিজ ২০২১’ নামের এই মহড়া চলবে দু’সপ্তাহ। কৃষ্ণসাগরে যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতের আবহের মধ্যে বড় পরিসরের এই মহড়ায় উত্তেজনা আরও বাড়বে।
গত ২৩ জুন কৃষ্ণসাগরে যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজকে সতর্ক করে এর গতিপথে গুলি ও বোমা ছোড়ার দাবি করে রাশিয়া। রুশ জলসীমায় ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ অনুপ্রবেশের অভিযোগ করে মস্কো।
কিন্তু যুক্তরাজ্য এমন কিছু ঘটার কথা বেমালুম অস্বীকার করেছে, যা নিয়ে রাশিয়া-যুক্তরাজ্য সংঘাত দেখা দিয়েছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করেছে। তখন থেকেই ক্রিমিয়া উপকূলের চারপাশের জলসীমাকে রাশিয়া তাদের আওতাধীনেই ধরে নিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং পশ্চিমা দেশগুলো এই উপদ্বীপকে ইউক্রেইনের অংশ হিসাবেই দেখে।
এ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে দেশগুলোর উত্তেজনা বিরাজ করছে। তার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র কৃষ্ণসাগরে এই সামরিক হড়ার পরিকল্পনা করার পর গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে অবস্থিত রুশ দূতাবাস থেকে ফোন করে তা বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছিল।
তাছাড়া, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ও হুঁশিয়ার করে বলেছে, মহড়া চললে তারা তাদের জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনে প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
কৃষ্ণসাগরের এ মহড়ায় নেটো জোটসহ অন্যান্য দেশের ৫,০০০ সামরিক সদস্য অংশ নেবে। তাছাড়া, প্রায় ৩০টি যুদ্ধ জাহাজ এবং ৪০ টি বিমানসহ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী ইউএসএস রস এবং ইউএস মেরিন কোর থাকছে মহড়ায়।
মহড়ায় অংশগ্রহণ নিয়ে ইউক্রেইন বলছে, বহুজাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা অভিযানকালে যৌথ মহড়ার মধ্য দিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করাটাই মূল লক্ষ্য।
রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের পর থেকেই ইউক্রেইনের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের অবনতি হয়। তাছাড়া, পূর্ব ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদেরকে রাশিয়ার সমর্থন দেওয়া নিয়েও ক্ষুব্ধ কিয়েভ। তার ওপর এ বছর ইউক্রেইনের সঙ্গে সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন দু’দেশের উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।