প্রায় তিন বছর আগে ক্রাইস্টচার্চ থেকে ভয়াল স্মৃতি নিয়ে এক ম্যাচ না খেলেই দেশে ফিরেছিল বাংলাদেশ দল। এবার সেই ক্রাইস্টচার্চ থেকে লজ্জাজনক হার নিয়ে দেশে ফিরবেন ক্রিকেটাররা।

আগের ম্যাচ জয়ের কারণে এ ম্যাচটি ড্র করলেও বাংলাদেশ সিরিজ জিতে যেত। কিন্তু ৩ দিনও খেলতে পারেনি টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭৮ রানে অলআউট হয়ে এক ইনিংস ও ১১৭ রানের ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ।

ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে টাইগারদের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংয়েই মূলত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের ফল। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২৬ রানে অলআউট হওয়ার পর ইনিংস পরাজয় এড়াতে বাংলাদেশের দরকার ছিল আরও ৩৯৫ রান। কিন্তু লিটন দাস ব্যতীত আর কেউই বড় ইনিংস খেলতে না পারায় ইনিংস ব্যবধানে হেরেই শেষ হলো বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ইতিহাসগড়া ম্যাচে জয়ের জন্য পঞ্চম দিনের প্রথম সেশন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল বাংলাদেশক। তবে এ ম্যাচ তিন দিনের মধ্যেই বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে কিউইরা।

টেস্ট সিরিজের শেষটিতে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ১১৭ রানে। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫২১ রান করে নিউজিল্যান্ড। দুই ইনিংস মিলিয়েও ওই রান করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ১২৬ ও পরের ইনিংসে ২৭৮ রান করে অলআউট হয় বাংলাদেশ দল।

আগের দিন ফলো-অনে পড়া বাংলাদেশ তৃতীয় দিনের শুরুতে ব্যাট করতে নামে। ৪৮ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান ওপেনার সাদমান ইসলাম। আরেক ওপেনার নাঈম শেখ অবশ্য এদিন খেলছিলেন বেশ দারুণ। অফ স্টাম্পের বাইরে থাকা বল ছাড়ছিলেন তিনি। খোঁচা দিয়ে আউট হন সাউথির বলে। দুর্দান্ত ক্যাচ নেন টম ল্যাথাম। ৯৮ বলে ২৪ রান করেন নাঈম।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক আশা দেখিয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ৩৬ বলে ২৯ রান করে শান্ত ও ৬৩ বলে ৩৭ রান করেন মুমিনুল। মাঝে আশার আলো হয়ে থাকেন লিটন দাস। দারুণ সব শট খেলেন এ ব্যাটসম্যান। তাকে ভালো সঙ্গও দিচ্ছিলেন নুরুল হাসান সোহান।

কিন্তু তিনিও আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে আউট হন। ৫৪ বলে ৩৬ রান করে সোহান ড্যারেল মিচেলের বলে ক্যাচ তুলে দেন নেইল ওয়েগনারের হাতে। তাতে অবশ্য থামেনি লিটনের দারুণ ব্যাটিং। নিজের সেঞ্চুরিও পূর্ণ করে নেন তিনি। ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ১১৪ বলে ১০২ রান করে আউট হন তিনি। তার আউটের সঙ্গে দ্রুতই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশও। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে এবাদতের উইকেট নিয়ে ম্যাচের ইতি টানেন রস টেইলর। ক্রিজে অপরপ্রান্তে ৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন তাসকিন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নিউজিল্যান্ড সফরকালে ২০১৯ সালে ক্রাইস্টচার্চে দুইটি মসজিদে হামলা চালিয়েছিল এক উগ্রপন্থি সন্ত্রাসী৷ বন্দুক নিয়ে মসজিদে ঢুকে সাধারণ মুসল্লিদের ওপর গুলি চালায়৷ ওই ঘটনায় ৫১ জন সাধারণ মুসলিমের মৃত্যু হয়েছিল৷ অল্পের জন্য বেঁচে যান ক্রিকেটাররা। কারণ ওই মসজিদে ক্রিকেটাররাও নামাজ পড়ার কথা ছিল।