বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৪) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কলমিবুনিয়া গ্রামে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে প্রবেশ করে গলায় ছুরি ধরে স্থানীয় চার বখাটে তাকে ধর্ষণ করে। এদিন রাতে মেয়েটির বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে তার পরিবার। এ ঘটনায় ধর্ষকদের আটকে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।

নির্যাতিতা কিশোরী কচুয়া উপজেলার মসনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী বলেন, বুধবার বাবা-মা আমার বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এজাজুল মোল্লা, সোহেল শেখ, টিপু শেখ ও সজিব মোল্লা কৌশলে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে। পরে তারা আমার গলায় ছুরি ধরে এবং দড়ি দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। তাদের অত্যাচারে আমি
জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

ধর্ষণে অভিযুক্ত এজাজুল মোল্লা (২২) কলমিবুনিয়া গ্রামের কাদের মোল্লার ছেলে, সোহেল শেখ (২২) একই গ্রামের আজাহার শেখের ছেলে, টিপু শেখ (২৫) একই গ্রামের ইউসুফ শেখের ছেলে এবং সজিব মোল্লা (২৫) একই গ্রামের বারেক মোল্লার ছেলে। অভিযুক্তরা এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয় অনেক মেয়ের সাথে এর আগেও তারা খারাপ ব্যবহার করেছে বলে উল্লেখ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহিম মোল্লা বলেন, বাধাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নকিব ফয়সাল অহিদসহ আমরা সকলে মিলে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। আমরা অত্যাচারকারী বখাটেদের কঠোর শাস্তি চাই।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী খুলনায় ছিলাম। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে বাড়িতে আসি। মেয়ের কাছে বিষয়টি শুনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমি আমার মেয়ের ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স তুলশী রানী বিশ্বাস বলেন, মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড় ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণের ফলে মেয়েটি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমরা তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করছি।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আমরা মেয়েটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করছি।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আছাদুজ্জামান বলেন, খবর শুনে আমরা হাসপাতালে এসেছি। ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের অভয় দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের আটক করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।