পিচঢালা সড়ক, এরপর সবুজ বুনো পথে দৌড়াচ্ছে কয়েকটি ছাগল। চলার পথে থেমে সাবাড় করছে নাগালে থাকা ঝোপঝাড়, আগাছা। আর সেটা দেখতেই কিনা ভিড় জমিয়েছে একদল মানুষ। ছাগলের দৌড় ঘিরে বসেছে রীতিমতো উৎসব। শিশুরা আনন্দে মেতেছে। আয়োজন করা হয়েছে গানের আসর। গত বুধবার অবাক করা এই আয়োজন বসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের রিভারসাইড পার্কে। আয়োজনের নাম ‘রানিং অব দ্য গোটস’।

এই আয়োজনে পার্শ্ববর্তী গ্রামের একটি খামার থেকে আনা হয়েছিল দুই ডজন ছাগল। এক পাশে ছাগল, অন্য পাশে দর্শনার্থী। মাঝখানে কাঠের বেড়া। বেড়ার ওপাশ থেকে ছাগলগুলোর কাণ্ডকীর্তির ছবি তুলছিলেন অনেকেই। শিশুরা কাছে ডেকে আদর করছিল ছাগলগুলোকে। এ যেন ছাগল ঘিরে এলাহি কাণ্ড।

তবে উপস্থিত লোকজনকে বিনোদন দেওয়াই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য নয়। এর পেছনে রিভারসাইড পার্ক কর্তৃপক্ষের ভিন্ন একটা উদ্দেশ্যও রয়েছে। বছরের এই সময়ে প্রাকৃতিক ঝোপঝাড় ও আগাছায় ভরে ওঠে পার্কের সবুজ পরিবেশ। এসব আগাছা পুড়িয়ে ফেললে কিংবা রাসায়নিক দিয়ে নষ্ট করলে পরিবেশের ক্ষতি হবে—সেই ভাবনা থেকে গ্রামের খামার থেকে ধরে আনা হয় ছাগল। আয়োজন করা হয় ছাগলের দৌড় এবং তা ঘিরে উৎসবের। আর ছাগলগুলো চলার পথে আগাছা সাবাড় করে যায়। এভাবেই একদিকে মানুষ বিনোদন পায়, অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব উপায়ে আগাছামুক্ত হয় পার্ক। এ যেন একের ভেতর দুই কাজ।

রিভারসাউড পার্কের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ড্যান গ্যারোদনিক বলেন, ‘চলার পথে ছাগলগুলো জাপানিজ নটওয়েড, মাল্টিফ্লোরা রোজ, পয়জন আইভিসহ যত ধরনের গুল্ম পেয়েছে, সাবাড় করতে দ্বিতীয়বার ভাবেনি। এটা যেন ওদের জন্য বুফে খাবারের আয়োজন—যত পারো খাও। এটা একদিকে ছাগলগুলোর জন্য যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনি পার্কের জন্যও পরিবেশবান্ধব আয়োজন। কেননা, এই পার্কে আগাছা পরিষ্কার করতে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না।’

শুধু এক দিনের আয়োজন নয় এটি। পাঁচটি ছাগল আগস্টের শেষ নাগাদ ওই পার্কে রয়ে যাবে। আগাছা সাবাড় করার দায়িত্ব সামলাবে। এমনকি সাধারণ মানুষ ওই পাঁচ ছাগলকে ভোট দিতে পারবেন। সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে গ্রীষ্মের শেষে একটি ছাগল ‘সেরা’ নির্বাচিত হবে।