বগুড়ার বিখ্যাত সরার দই ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া এবার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) ২৬ জুন এক সভায় এ অনুমোদন দেয়।

একই দিন শেরপুরের তুলসীমালা ধান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আমকেও জিআই পণ্য হিসেবেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশের ১৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল।

কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

দেশের প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পায় জামদানি। এরপর একে একে স্বীকৃতি পায় ইলিশ, ক্ষীরশাপাতি আম, মসলিন, বাগদা চিংড়ি, কালিজিরা চাল, বিজয়পুরের সাদা মাটি, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, দিনাজপুরের কাটারিভোগ চাল, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম। নতুন করে এ তালিকায় যুক্ত হলো এ চার পণ্য।

জানা যায়, প্রায় ১৫০ বছর আগে বগুড়া জেলার শেরপুরের নীলকণ্ঠ ঘোষের মাধ্যমে এ দইয়ের উৎপাদন শুরু হয়। পরে নওয়াব আলতাফ আলী চৌধুরীর (পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলীর বাবা) পৃষ্ঠপোষকতায় গৌর গোপাল পাল নামে এক ব্যক্তি বগুড়া শহরে এ দইয়ের উৎপাদন শুরু করেন। বর্তমানে নওয়াববাড়ি রোডে তার দুই ছেলে ‘শ্রী গৌর গোপাল দধি ও মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’- এর মালিক বিমল চন্দ্র পাল ও স্বপন চন্দ্র পাল সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।

ji langra amm

ছবি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম।

দেশের অন্যান্য এলাকায় দই উৎপাদিত হলেও কিছু বিশেষত্বের কারণে ‘বগুড়ার দইয়ের’ খ্যাতি দেশজুড়ে। মান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করায় বগুড়ার দই স্বাদে-গুণে অনন্য।

ডিপিডিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, বগুড়া রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির আবেদনের ভিত্তিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই শেষে বগুড়ার দইকে জিআই হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তুলসীমালা ধান, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

bagura doi2

ছবি: বগুড়ার বিখ্যাত সরার দই।  

আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ববিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নির্দেশনা অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) জিআই পণ্যের স্বীকৃতি ও সনদ দিয়ে থাকে। কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।