রাজধানীর কলাবাগানে জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আট আসামির মধ্যে ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়া, আকরাম হোসেন, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে খালাস পাওয়া দুই জন হলেন- সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ।

রায় পড়া শুরুর আগে আসামি মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পলাতক রয়েছেন মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়া, আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ।

এর আগে মামলার বাদী জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘আমরা চাই যারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, যারা প্রকৃত অপরাধী, সেসব অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা যেন নিশ্চিত হয়।’

রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৩ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।

ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। কারাগারে থাকা চার আসামির পক্ষে আইনজীবী নজরুল ইসলাম ও খায়রুল ইসলাম লিটন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

এ ছাড়া পলাতক চার আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী মো. জাকির হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

মামলার আট আসামি হলেন-নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখার প্রধান ও বরখাকৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী, জুনাইদ আহমদ ওরফে মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ।

আসামিদের মধ্যে প্রথম চারজন পলাতক। আর পরের চারজন কারাগারে রয়েছেন।

২০১৯ সারের ১২ মে জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম এ চার্জশিট দাখিল করেন।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে ইউএসএইড কর্মকর্তা ও সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন একটি হত্যা মামলা এবং ওই থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র আইনের মামলাটি করেন। হত্যা মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হলেও অস্ত্র আইনের মামলাটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।