ঝালকাঠিতে তেলবাহী ট্যাংকার (সাগর নন্দিনী-২) বিস্ফোরণের তৃতীয় দিনের অভিযানে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে নিখোঁজ চারজনের মরদেহই উদ্ধার করা হলো। এ ঘটনায় এখন আর কেউ নিখোঁজ নেই বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট শাফায়েত হোসেন বলেন, বিস্ফোরণে জাহাজের ভেঙে পড়া অংশ থেকেই তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম জানান, বিস্ফোরণের পর সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটির একটি অংশ উড়ে গিয়ে সুগন্ধা নদীতে পড়েছিল।
আজ সকাল থেকে নদী থেকে জাহাজটির অংশ উদ্ধারে কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘নির্ভিক’। পরে বেলা ১১টার দিকে ভাঙা অংশটি উদ্ধারের পর তাতে দুই জনের মরদেহ পাওয়া যায়। দুপুরে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরিরা। এর আগে রোববার (২ জুলাই) জাহাজটির ইঞ্জিন রুম থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
যে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন- জাহাজের মাস্টার ইনচার্জ রুহুল আমীন খান, গ্রিজারম্যান আব্দুস সালাম হৃদয়, ড্রাইভার সারোয়ার হোসেন এবং সুপারভাইজার মাসুদুর রহমান বেলাল।
ঈদের দিন বৃহস্পতিবার সাগর নন্দিনী-২ ট্যাংকারটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর পাড়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানির জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে আসে। ৯ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে সেটি নোঙ্গর করা ছিল রাজাপুর গ্রামের কাছে। শনিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে হঠাৎ করেই ট্যাংকারটিতে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। এতে জাহাজের পাঁচজন দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঝালকাঠি জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসক ও জাহাজের উদ্ধার হওয়া বাবুর্চির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জাহাজটিতে মোট ৯ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫ জন দগ্ধ হয়েছেন, নিখোঁজ চারজনের মধ্যে গতকাল রোববার দুপুরে জাহাজের ইঞ্জিনরুম থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, সাগর নন্দিনী-২ নামের এই জাহাজটি মাত্র ছয় মাস আগে ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে চাঁদপুরে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিপোতে যাওয়ার পথে ভোলার তুলাতুলি কাঠিরমাথা এলাকায় ডুবে গিয়েছিল। তখন কুয়াশার মধ্যে বালুবাহী একটি বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষে ট্যাংকারটির তলা ফেটে গিয়েছিল।
অপরদিকে এখন পর্যন্ত বিস্ফোরিত জাহাজটি থেকে ৪ লাখ লিটার তেল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পদ্মা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তারা। এছাড়া বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে কোম্পানির ব্যবস্থাপককে (অপারেশন) প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। শনিবার দুর্ঘটনার পর থেকেই কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান।