নতুন টাকা ছাপিয়ে দেশের দুর্বল ছয়টি ব্যাংকে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে আগামী রোববার থেকে ব্যাংকগুলোতে টাকা পাবেন গ্রাহকরা। তবে চাহিদার চেয়ে বেশি অর্থ না তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলো হলো— ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা জানান। এ সময় ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলো তারল্য সহযোগিতা দিচ্ছি। আমানতকারীদের সুরক্ষার জন্য এটি দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে শাখাগুলোয় যে অস্থিরতা ছিল সেটি থেকে বেরিয়ে এসেছি। শাখাগুলোয় রোববার থেকে সবাই (গ্রাহক) নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাবেন।
আমানতকারীদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, আমানতকারীদের টাকা নিরাপদে আছে, আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আপনারা যে ব্যাংকেই টাকা রেখে থাকুন নিরাপদে থাকবে, সমস্যা হবে না। আপনাদের যতটুকু টাকা প্রয়োজন ততটুকুই তুলুন। আমানতকারীর টাকা নিয়ে সমস্যা নেই, এ নিয়ে মাথাব্যথা আমাদের। আমানতকারীর টাকা সুরক্ষিত থাকবে। তবে একবারে একসঙ্গে সবাই টাকা উত্তোলন করতে গেলে কোনো ব্যাংকই টিকবে না।
নতুন টাকা ছাপানো নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে টাকা সরবরাহ করেছি। এখানে টাকার ফ্লো বাজারে বাড়বে না, আবার মূল্যস্ফীতিও বাড়বে না। কারণ, আমরা এক হাতে টাকা দিচ্ছি, বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমে সেসব টাকা অন্য হাতে তুলেও নিচ্ছি।
এস আলমের মামলা করার হুমকির বিষয়ে গভর্নর বলেন, উনি কী করবেন ওটা ওনার বিষয়। আমরা আইন অনুযায়ী তাদের অ্যাসেট বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেব। অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে কথা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটা করা হচ্ছে।
ব্যাংকারদের আন্দোলন ও প্রভাবশালীদের চাপ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, মব জাস্টিস মেনে নেব না। আমাকে কেউ চাপ দিলে চাকরি ছেড়ে চলে যাব। কিন্তু কোনো অনিয়ম বরদাশত করব না।
বিগত দিনে যারা অনিয়মে যুক্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সামনের দিকে তাকাতে হবে। আমাদের পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। নিদিষ্ট অভিযোগ না পেলে আমি নিজ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেব না। এখানে দলাদলি আছে। লাল, নীল দলের প্রতিনিধিত্ব না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হয়ে কাজ করেন।
খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, এতদিন প্রকৃত খেলাপি ঋণের চিত্র প্রকাশ হতো না। এখন সঠিক নিয়মে হিসাব হবে। এতে করে যদি খেলাপি ঋণ ২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায় তাহলেও কিছু করার নেই।