যুক্তরাষ্ট্রে চলমান করোনা নির্মূল অভিযানে সার্স-কোভ-২ বা করোনাভাইরাসের অভিযোজিত ধরন ডেল্টাকে সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্বের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের প্রধান চিকিৎসা বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. অ্যান্থনি ফাউসি। ডেল্টার সংক্রমণ প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার এক বার্তায় ডা. ফাউসি বলেন, ‘করোনামুক্তির লড়াইয়ের পথে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখন সবচেয়ে বড় হুমকির নাম ডেল্টা। মূল করোনাভাইরাসের তুলনায় যে এর সংক্রমণ ও ধ্বংসক্ষমতা বেশি তা ইতোমধ্যে স্পষ্ট এবং প্রশ্নাতীত।’

‘তবে আশার কথা হলো, করোনা টিকা ফাইজার-বায়োএনটেক এই ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম। আমাদের কাছে এই টিকার ডোজের মজুত পর্যাপ্ত পরিমাণ রয়েছে। এখন সময় এসেছে ডোজগুলো ব্যবহার করে এই মহামারিকে চুড়ান্তভাবে ধ্বংস করার।’

এর আগে শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর শীর্ষ গবেষক সৌম্য স্বামীনাথান জানিয়েছিলেন, সংক্রমণের দিক থেকে বর্তমানে মূল করোনাভাইরাস এবং তার অন্যান্য সব অভিযোজিত ধরনকে ছাড়িয়ে গেছে ডেল্টা।

গত বছর অক্টোবরে ভারতে প্রথম শনাক্ত হয় করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা। ডব্লিউএইচও-এর তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৮০ টি দেশে ডেল্টায় আক্রান্ত রোগী আছেন।

ভারতে চলমান করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত দুই মাসে সরকারি হিসেবেই মারা গেছেন ২ লাখের বেশি মানুষ, আক্রান্ত ছাড়িয়েছে কোটির সংখ্যা। আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশটিতে গত দু’মাসের ধ্বংসযজ্ঞের জন্যও দায়ী করোনার ডেল্টা ধরন।

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য গত কয়েক মাসে বেশ সফলভাবেই পরিচালনা করেছে গণটিকাদান কর্মসূচি। সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মোট প্রাপ্তবয়স্কদের ৪৫ শতাংশই করোনা টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন।

তবে আগামী ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের আগেই দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার যে লক্ষ্য ছিল বাইডেন প্রশাসনের তা পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের করোনা বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জিওফ্রি জিয়েন্টস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ককে টিকার আওতায় আনতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন হবে।