আজ রাতেই বিদায় নিচ্ছে ইংরেজি বর্ষ ২০২১। নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। একই সঙ্গে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায়ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার রাতে রাজধানীতে উন্মুক্ত স্থানে যেকোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ছাড়া পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালনাসহ যেকোনো ধরনের অশোভন আচরণ এবং বেআইনি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।

গতকাল ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাজধানীর নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ১২টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হলো- ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় এবং প্রকাশ্য স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত, সমাবেশ অথবা উৎসব করা যাবে না। উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি অথবা পটকা ফোটানো যাবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা অথবা কর্মচারীরা আজ শুক্রবার রাত ৮টার মধ্যে স্ব স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তন করবেন এবং ৮টার পর প্রবেশের ক্ষেত্রে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে ওই এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকরা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।

একইভাবে উপর্যুক্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যেসব নাগরিক বসবাস করেন না তাদের বর্ণিত এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। হাতিরঝিল এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে কোনো সমাবেশ অথবা অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং কোনো যানবাহন থামিয়ে অথবা পার্কিং করে কেউ অবস্থান করতে পারবে না। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকদের আজ রাত ৮টার মধ্যে স্ব স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে।

ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে কাল শনিবার ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব ধরনের লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি। এ ছাড়া আজ রাত ৮টা থেকে কাল ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহন প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাত ৮টা থেকে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তেজগঁঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা, ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং এলাকাসমূহে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

তবে ওই এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে কাল ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী ছাড়া অন্য যেকোনো ব্যক্তি অথবা যানবাহন কেবলমাত্র পুরনো হাই কোর্ট-দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট-পলাশী মোড় দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। ওই এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যান্য সব ক্রসিং বন্ধ থাকবে। রাত ৮টা থেকে শাহবাগ, নীলক্ষেত ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, বকশীবাজার ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং এবং চাঁনখারপুল অথবা শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না। কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালালে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।