দীর্ঘ ৩ বছর পর মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে সাংগাঠনিকভাবে ঝিমিয়ে পড়া বিএনপির নির্বাহী কমিটি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ধারাবাহিক সভা। প্রথম দিনের সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দলের করণীয় সম্পর্কে সিনিয়র নেতাদের মতামত নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে জ্যেষ্ঠ নেতাদের এ মতামত নেন তারেক রহমান। বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সাড়ে ৪ ঘণ্টা এই বৈঠক হয়। তবে বৈঠক শেষে তেমন কিছুই বলেননি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ভার্চুয়াল এ বৈঠকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মিলে উপস্থিত ৬২ জনের মধ্যে ২৮ জন বক্তব্য রাখেন।
বৈঠকে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, নিরপেক্ষ ব্যক্তি নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে অধিকাংশ নেতা আন্দোলন জোরদার করার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন বলে জানা গেছে।
তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকের সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বেশি কিছু এখন বলার নেই।’
বিএনপির মহাসচিব জানান, ‘বুধ ও বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর তিন দিনের বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’
বৈঠকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান, মীর নাসির উদ্দিন, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী ও শওকত মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মনিরুল হক চৌধুরী, মশিউর রহমান, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, লুতফর রহমান খান আজাদ, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, ফজলুর রহমান, শাহজাহান মিয়া, সুকোমল বড়ুয়া, খন্দকার মুক্তাদির আহমেদ, এসএম ফজলুল হক, আবদুল হাই, ভিপি জয়নাল আবেদীন, গোলাম আকবর খন্দকার, অধ্যাপক শাহেদা রফিক, আফরোজা খানম রীতা, তাহসিনা রুশদীর লুনা, ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম, আবদুল লতিফ খান, আবদুল কাইয়ুম, ইসমাইল জবিল্লাহ, এরামুজ্জামান, তৈমুর আলম খন্দকার, মইনুল ইসলাম শান্ত, মাহবুবুর রহমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, শাহজাদা মিয়া, আবদুল হাই শিকদার, এনামুল হক চৌধুরী, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, আতাউর রহমান ঢালী, বোরহান উদ্দিন, সৈয়দ শামসুল আলম, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, নজমূল হক নান্নু প্রমুখ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতরের সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ ও চেয়ারপারসন কার্যালয়ের এবিএম আবদুস সাত্তার ও রিয়াজ উদ্দিন নসুও বৈঠকে অংশ নেন।
২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত ৫০২ সদস্যের বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে ৩৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ৭৪ জন।
দ্বিতীয় দিন ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সহ সম্পাদকদের সঙ্গে এবং পরদিন বৃহস্পতিবার দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল। তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে এটেই প্রথম সিরিজ বৈঠক।