মেহেদীর রঙ না শুকাতেই বিয়ের দেড় মাসের মাথায় ‘আত্মহত্যা’র পথ বেছে নিতে হলো ফেনীর তরুণী সানজিদা আক্তারকে (২০)। ঘটনাটি ঘটে ২৭ ডিসেম্বর সোমবার রাতে ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের আক্রামপুর এলাকার ওলি কন্ট্রাকটার বাড়িতে। স্বামীর বসতঘরে সানজিদা তার শয়ন কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, গত ৭ নভেম্বর দুবাই প্রবাসী আবুল বাশারের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা সানজিদা আক্তারের। সানজিদা ফেনী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিয়ের সময় বাশারের পরিবার কোন যৌতুক লাগবে না বললেও বিয়ের কয়েকদিন পর থেকে যৌতুক দাবিতে সানজিদার ওপর মানসিকভাবে নির্যাতন চালানো শুরু করে। সানজিদার মা মোহছেনা আক্তার জানান, আবুল বাশার বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় তার মেয়ে সানজিদাকে পছন্দ হয়নি বলে মারাত্মকভাবে কটাক্ষ করতেন। আরও বলতেন, পরিবারের চাপে পড়ে তাকে বিয়ে করেছে। এই বাড়িতে থাকলে হলে তাকে নগদ টাকা দিতে হবে। না দিলে কাবিনের টাকা নিয়ে তাকে চলে যেতেও বারবার চাপ প্রয়োগ করে। গত ২৪ ডিসেম্বরও সানজিদা তার মাকে মোবাইলে স্বামীর বাড়ির লোকজন অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে বলে জানান। সানজিদা তার মাকে আরও বলেন, সে আর সহ্য করতে পারছে না।
এই ঘটনায় সানজিদার মা মোহছেনা আক্তার ঘটনার রাতেই ফেনী মডেল থানায় সানজিদার স্বামী আবুল বাশার, শ্বশুর ওলি আহমেদ, শাশুড়ি সাফিয়া খাতুন, ভাসুর জাফর, জা রুবি বেগম, ননদ পিংকি বেগমকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার এসআই নারায়ন চন্দ্র দাস জানান, নিহতের স্বামী বাশারকে ঘটনার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ কাশিমপুর এলাকার পৈত্রিক বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিজাম উদ্দিন জানান, গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।