আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ ডুবোজাহাজটির অনুসন্ধান এলাকায় পানির নিচে শব্দ শোনা গেছে। আমেরিকার কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, একটি কানাডিয়ান পি-থ্রি বিমান পানির নিচে শব্দ শনাক্ত করেছে। এটি নিশ্চিত করেছে আমেরিকার কোস্ট গার্ড।

আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে দর্শনার্থীদের টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে গিয়ে নিখোঁজ ডুবোজাহাজটির সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। টাইটান নামের ডুবোজাহাজটি খুঁজে বের করতে প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী, কানাডিয়ান সামরিক ও উপকূলরক্ষী এবং জাহাজটির মূল সংস্থা- ওশানগেট এক্সপিডিশন। বিভিন্ন সমুদ্র সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, ওই সাবমেরিনে এখন টিকে থাকার জন্য ৩০ ঘণ্টারও কম অক্সিজেন আছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরের পর এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ডের ক্যাপ্টেন জেমি ফ্রেডেরিক বলেন, তাদের বাহিনীর সদস্যরা ‘ঘড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে’ ডুবোজাহাজটি খুঁজছে। তিনি বলেন, এটি হচ্ছে বিশাল এলাকা জুড়ে জটিল একটি অভিযান।

তবে পানির নিচে সংকেত পাওয়ার বিষয়টি তল্লাশি অভিযানে অগ্রগতি বলেই মনে হচ্ছে। এর ফলে অনুসন্ধানকারী দল ওই শব্দের উৎস বের করতে পারলেই হয়তো ডুবোযানটির কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব হবে।

আটলান্টিকের ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের সমান। ফ্রান্সের একটি গবেষণা জাহাজকে ওই এলাকায় গিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই জাহাজে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ রোবট সাব রয়েছে। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে এর।

কিন্তু এই জাহাজটি বর্তমানে যে অবস্থানে রয়েছে সেখান থেকে উদ্ধার তৎপরতার স্থানে যেতে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। দুইভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। হয়তো পানির ওপরে ডুবোজাহাজটি ভেসে উঠেছে, কিন্তু যোগাযোগ যন্ত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে পানির ওপরে খুঁজছে একাধিক বিমান।

অন্যদিকে যন্ত্র ব্যবহার করে দেখা হচ্ছে, সমুদ্রের পানির নিচে কোথাও ডুবোজাহাজটি রয়েছে কি না। স্থানীয় সময় রোববার আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপ দেখার জন্য পানির নিচে যাওয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর মাদার ভেসেল পোলার প্রিন্স থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ওই ডুবোজাহাজে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান রয়েছেন। এছাড়া ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক পাইলট পল-হেনরি নার্গেওলে এবং পর্যটন সংস্থা ওশানগেটের প্রধান নির্বাহী স্টকটন রাশও রয়েছেন এতে।

টাইটার সাবমার্সিবলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি রয়েছে বলে ২০১৮ সালে সতর্ক করে দিয়েছিলেন ওশানগেটের সাবেক একজন বিশেষজ্ঞ। সে কারণে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।