আমেরিকান সেনাসহ বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যেই আফগানিস্তানের প্রধান প্রধান শহরগুলো দখলে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবানের যোদ্ধারা। প্রতিরোধ করে যাচ্ছে আফগান সেনারাও। তবে তীব্র আক্রমণের কারণে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহের দখল চলে যেতে পারে তালেবানের হাতে। ওই শহরের খুব কাছে পৌঁছে গেছে কট্টর তালেবানরা।

এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এছাড়া আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোও একই ধরনের সংবাদ পরিবেশন করেছে। গণমাধ্যমগুলো বলছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানীতে আক্রমণ আরও তীব্র করেছে তালেবান যোদ্ধারা। যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে আক্রমণ বাড়িয়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে তালেবানের কাছে আফগানিস্তানের প্রথম কোনো প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে লস্করগাহের পতন হতে পারে।

তালেবান যোদ্ধারা শহরের একটি টেলিভিশন স্টেশন দখল করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়া হাজার হাজার মানুষ গ্রামীণ এলাকাগুলোর দিকে পালিয়ে যাচ্ছেন এবং তাদের অনেকে শহরের আশপাশের বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন।

লস্করগাহের এক হাসপাতাল থেকে সেখানকার এক চিকিৎসক জানান, চারদিকে এখন কেবলই যুদ্ধ চলছে।

এদিকে তালেবান যোদ্ধাদের মোকাবিলায় শত শত অতিরিক্ত আফগান সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী তালেবান গোষ্ঠীর যোদ্ধারা। ইতোমধ্যেই দেশের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা তালেবানের দখলে চলে গেছে বলে বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক অভিযানের অন্যতম কেন্দ্র ছিল এই হেলমান্দ প্রদেশ। এটি তালেবানের দখলে গেলে তা হবে আফগান সরকারের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয়। লস্করগাহের পতন ঘটলে ২০১৬ সালের পর এটিই হবে তালেবানদের প্রথম কোনো প্রাদেশিক রাজধানী দখল। লস্করগাহসহ বর্তমানে তিনটি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিতে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান।

লস্করগাহ থেকে আফগান সামরিক বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল সামি সাদাত বিবিসি’কে বলেন, এখানে তালেবানের বিজয় বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। তার মতে, এটা আফগানিস্তানের কোনো যুদ্ধ নয়। এটা স্বাধীনতা বনাম সর্বগ্রাসীতার মধ্যকার যুদ্ধ।