প্রাণঘাতী বন্যায় দেশের কিছু এলাকায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের কয়েকদিন পর এবার চীন অভিমুখে ছুটে আসছে ভয়ঙ্কর এক টাইফুন। ‘ইন-ফা’ নামের টাইফুনটি আগামীকাল রোববার দেশটির সাংহাই উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

ফ্লাইট বাতিল ও ট্রেন চলাচল বন্ধ দেওয়া হয়েছে। ঘরের ভেতরে থাকতে বলা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রবল বাতাস ও সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সঙ্গে বন্যারও শঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে সাংহাইয়ের ব্যস্ত বন্দর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নৌযান।

চীনের মধ্যাঞ্চলে ঐতিহাসিক এক বন্যায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং তাতে অন্তত ৫৮ জন মানুষের প্রাণহানির মধ্যেই টাইফুন ধেঁয়ে আসছে। জরুরি সেবা বিভাগের কর্মীরা এখনো দিনরাত জীবিতদের উদ্ধারে কাজ করছেন। খাদ্যসহ অন্যান্য ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন বন্যা দুর্গতদের।

টাইফুন ইন-ফার কারণে আগামী অন্তত কয়েকদিনে বন্যাকবলিত ওই অঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টির শঙ্কা করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এতে বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের উদ্ধার কার্যক্রম ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার যে প্রচেষ্টা তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।

শনিবার রাত ৯টার দিকে চীনের জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার সবশেষ জানিয়েছে, ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার গতিতে তাইওয়ান থেকে চীনের উপকূলের দিকে ধেঁয়ে আসছে টাইফুন ইন-ফা। রোববার যে কোনো সময় যা চীনের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

সবশেষ আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দিয়ে বলেছেন, চীনের উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আগ পর্যন্ত টাইফুনের আরও শক্তিশালী হওয়ার শঙ্কা নেই। আছড়ে পড়ার পর বন্যা ও ভূমিধস হতে পরে। আর এ সময় এর গতি সর্বোচ্চ ১৯৩ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

চীনের জাতীয় আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টাইফুন ইন-ফার প্রভাবে রোববার থেকে দীর্ঘ সময় ধরে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারি বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বাতাস আর উত্তাল ঢেউ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

দেশটির ঝেজিয়ায়াং প্রদেশের কর্তৃপক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার ও ব্যবসাকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া চীনের সর্ববৃহৎ শহর সাংহাইয়ের কিছু পাবলিক পার্ক ও মিউজিয়ামও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টাইফুন মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।