প্রথম টি-টোয়েন্টিতে যে ২২ গজের গোলক ধাঁধায় নিউজিল্যান্ড নিজেদের হারিয়ে ফেলেছিল। তৃতীয় ম্যাচে এসে একই পরিণতি হলো স্বাগতিক বাংলাদেশের। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে কিউইদের কাছে ৫২ রানে হেরে গেছে স্বাগতিকরা। ১২৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে গিয়ে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে মাত্র ৭৬ রানেই! যা আবার টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর! এই জয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজ ২-১ করে ফেলেছে সফরকারী দল।

মিরপুরে আগের দুই ম্যাচের তুলনায় আজকের উইকেটটিকে ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো বলা হচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তার সদ্ব্যবহার করতে পারেনি মোটেও। বরং উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার মানসিকতা ছিল বেশি। তবে ১২৯ রানের লক্ষ্যে সূচনাটা আগ্রাসীই ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্বাগতিকরা।

টি-টোয়েন্টি স্টাইলে শুরু করেছিলেণ দু্ই ওপেনার লিটন-নাঈম। ছন্দপতন ঘটে ২.৫ ওভারে ঘটে। ম্যাকনকির ভেতরে ঢোকা বলে সুইপ করতে গিয়েছিলেন লিটন। পরাস্ত হওয়ায় বল গিয়ে আঘাত করে প্যাডে। লেগ বিফোর হয়ে লিটন ফেরেন ১৫ রানে।

প্রমোশন পেয়ে তার পরেই নামেন মেহেদী হাসান। কিন্তু ওপরে নামার সদ্ব্যবহার করতে পারলেন না। এজাজ প্যাটেলের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন মিডউইকেটে। একই ওভারে নতুন নামা সাকিবও হতাশ করলেন। উড়িয়ে খেলতে গেলে তালুবন্দি হয়েছেন ম্যাকনকির। আত্মঘাতী শটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বিদায় নেন শূন্য রানে।

সম্ভাবনাময়ী নাঈম দারুণ সূচনা করলেও ষষ্ঠ ওভারে পরাস্ত হন পুরোপুরি। রাচিন রবীন্দ্রর ঘূর্ণিতে প্লেইড অন হয়ে বোল্ড হন ১৩ রানে। তার ১৯ বলের ইনিংসে ছিল ২টি চার।

৩২ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ভালো চাপেই পড়ে যায় স্বাগতিকরা। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সেখান থেকে উত্তরণে ভূমিকা রাখবেন কি, এজাজ প্যাটেলের ঘূর্ণিতে ক্যাচ তুলে ফেরেন মাত্র ৩ রানে। আদতে তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে স্বাগতিক দল। পরের ব্যাটসম্যানরা শুধু উইকেট ছুঁড়ে এসেছেন। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়ে একে একে ফিরেছেন আফিফ, সোহান ও সাইফ।

শুধু এক প্রান্ত আগলে জয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তার যোগ্য সঙ্গী কেউ থাকলে, ম্যাচের ভাগ্য ভিন্ন কিছুও হতে পারতো! মুশফিক ৩৭ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকলেও ১৯.৪ ওভারে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ৭৬ রানে।

শুরুতে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করেছে ১২৮ রান। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কথা চিন্তা করলে লক্ষ্য খুব একটা সহজ নয়। তবে মিরপুরের উইকেট বিবেচনায় নিলে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে।

ষষ্ঠ উইকেটে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলের অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের জুটিতেই চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে নিউজিল্যান্ড। মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলেও লোয়ার মিডল অর্ডারে রান পেয়েছে সফরকারীরা। দলীয় সর্বোচ্চ ৩৬* রান এসেছে নিকোলসের ব্যাট থেকে। ২৯ বলের হার না মানা ইনিংসটি তিনি সাজান ৩ বাউন্ডারিতে। ব্লান্ডেল ৩০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে অপরাজিত থাকেন ৩০ রানে।

বাংলাদেশের সেরা বোলার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে তার শিকার ২ উইকেট। মাহমুদউল্লাহ ১০ রানে নেন ১ উইকেট। মেহেদী হাসান ২৭ রানে ও মোস্তাফিজুর রাহমান ২৯ রানে নেন একটি করে উইকেট।