যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বিভ্রান্তিকর ও ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি যে সমালোচনা করেছেন, তার জবাব দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

রোববার এক কর্পোরেট ব্লগ পোস্টে ফেসবুক কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট গাই রোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ৮৫ শতাংশই টিকা নিয়েছে বা টিকা নিতে আগ্রহী।’

‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনের লক্ষ্য ছিল ৪ জুলাইয়ের মধ্যে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। সেই লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে এবং এজন্য ফেসবুক কোনোভাবেই দায়ী নয়।’

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দেশের করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরম ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন।

মহামারি নিয়ে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রচার ঠেকাতে ফেসবুক যথেষ্ট তৎপর নয় উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘তারা মানুষকে হত্যা করছে….দেখুন, এখন পর্যন্ত যারা করোনা টিকা নেননি, তাদের মধ্যেই কিন্তু মহামারি ছড়াচ্ছে; আর তারা আজেবাজে তথ্য ও সংবাদ ছাপিয়ে মানুষ হত্যা করছে।’

কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ফেসবুক সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে। তবে মহামারি নিয়ে ভুয়া কন্টেন্ট এখনও ব্যাপকভাবে দেখা যায় প্ল্যাটফর্মটিতে। মার্চে এক প্রতিবেদনে উঠে আসে যে ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম ও টুইটারে ভ্যাকসিন বিরোধী অ্যাক্টিভিস্টদের প্রায় ৬ কোটি ফলোয়ার রয়েছেন।

ফেসবুকসহ যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম প্ল্যাটফরমসমূহে এ সম্পর্কিত সর্বশেষ যে গুজব রটেছে তা হলো, করোনা টিকা নিলে বন্ধ্যাত্বের শিকার হতে পারেন টিকাগ্রহণকারী।

শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই গুজবকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি।

পাশাপাশি, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপজ্জনক পোস্ট ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ, সঠিক তথ্যের প্রচার নিশ্চিত করা এবং নিজস্ব প্লাটফর্মে গুজব ও ভুয়া খবরের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবহারকারীদের সঙ্গে শেয়ার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এ সম্পর্কে শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে জেন সাকি বলেন, ‘একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলিায় ফেসবুক অবশ্যই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে; তবে এটিও পরিষ্কার যে আরও পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।’

রোববার এক বিবৃতিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোভিড-১৯ ও এর টিকা সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য বা দাবি প্রচারের বিরুদ্ধে কোম্পানির পক্ষ থেকৈ নিয়ম জারি করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে ব্যবহারকারীদের নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতেও সচেষ্ট তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ ও চিকিৎসাবিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোতে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ শনাক্তের হার ৭০ শতাংশ এবং মৃত্যু হার ২৬ শতাংশ বেড়েছে। বিশেষ করে যেসব রাজ্যে টিকাদানের হার কম সেখানেই মৃত্যু ও শনাক্ত বাড়ছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।