বাগেরহাটে ঘের সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় আওয়ামী লীগের নেতা আনারুল শেখ (৫৫) নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এর আগে, দুপুর ১টার দিকে জেলার সদর উপজেলার বৈটপুর এলাকার ঘের থেকে ফেরার পথে পিরোজপুর-বাগেরহাট মহাসড়কের চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের সামনে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়। পরে এক ভ্যানচালক তাকে উদ্ধার করেন। নিহত আনারুল ইসলাম বাগেরহাট পৌর শহরের বাসাবাটি এলাকার মৃত আব্দুল গনি কবিরাজের ছেলে। তিনি পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ছিলেন।

আনারুলের ভাতিজা মুরাদ শেখ বলেন, আমার ছোট চাচা বাচ্চু শেখের সাথে ঘের নিয়ে কালাম বয়াতী নামের এক ব্যক্তির বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে শনিবার সকালে কালামের আত্মীয় রশীদ হাওলাদারের ছেলে সোহেল হাওলাদার ওরফে কালা সোহেল ও তার ভাই রাখা হাওলাদারের নেতৃত্বে ৭ থেকে ৮ জন আমাদের বাড়িতে এসে ঘেরে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যায়। দুপুরের কিছু আগে বাচ্চু শেখ বৈটপুর এলাকায় থাকা ঘেরে গিয়ে দেখেন কালাম ঘের থেকে মাছ ধরছেন। কালামের কাছে মাছ ধরার কারণ জানতে চাইলে, কালাম খারাপ ব্যবহার করেন এবং কালা সোহেলকে ফোন দিয়ে আসতে বলেন। অবস্থা খারাপ বুঝে বাচ্চু শেখ ঘের থেকে চলে আসেন এবং তার ভাই আনারুল শেখকে ফোন করে ঘেরে যেতে বলেন। আনারুল শেখ রিকশা নিয়ে ঘেরে যান। এ সময় সেখানে কাউকে না পেয়ে ঘের থেকে ফিরে আসতে থাকেন। পথে মেরিন ইনস্টিটিউটের সামনে কালা সোহেল, রাখা ও গনেশসহ ৭ থেকে ৮ জন আমার চাচাকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে এক ভ্যানচালক চাচাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে নিলে চিকৎসকরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে আমার চাচা আনারুল শেখ মারা যায়।

আনারুল শেখে ছেলে জিসান বলেন, যারা আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।

৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মাসুম শেখ বলেন, একজন নিরীহ মানুষকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। যারা এই হত্যার সাথে জড়িত, তাদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তদন্ত চলছে। হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।