ফাইজার অ্যান্ড বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা নেওয়ার পর কয়েকজন টিকা গ্রহীতার হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দেওয়ায় দেশের হাসপাতাল ও টিকাদান কেন্দ্রগুলোকে সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।
শুক্রবারের ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব টিকাকেন্দ্রে ফাইজার ও মডার্নার টিকার ডোজ দেওয়া হচ্ছে, প্রতিটি ডোজের হিসেব এবং সেগুলো যাদের দেওয়া হচ্ছে তাদের শারীরিক অবস্থা বিষয়ক তথ্যাবলীর রেকর্ড রাখতে হবে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ দু’টি কোম্পনির টিকা নেওয়ার পর কয়েকজনের দেহে মায়োকার্ডিটি (হৃদপিণ্ডের পেশীর প্রদাহ) ও পেরিকার্ডিটি (হৃদপিণ্ডের বাইরের টিস্যুসমূহে প্রদাহ)-এর মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।
তারা আরও জানান, কোনো কোম্পানির করোনা টিকা নেওয়ার পর শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কিনা এবং হলেও তা কী ধরনের – সে সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে সম্প্রতি ইউএস ভ্যাকসিন অ্যাডভার্স ইভেন্ট রিপোর্টিং সিস্টেম (ভিএইআরএস) নামে একটি বিভাগ খুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখান থেকে জানা গেছে, ফাইজার ও মডার্নার টিকার ডোজ নেওয়ার পর গত ১১ জুন পর্যন্ত দেশটিতে মায়োকার্ডিটি অথবা পেরিকার্ডিটির মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ১২০০ জন।
ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই পুরুষ এবং তাদের বয়স ৩০-এর কোঠায়। বেশিরভাগই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর হয় মায়োকার্ডিটি অথবা পেরিকার্ডিটির মতো শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
শারীরিক এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে এ পর্যন্ত দেশটিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩০৯ জন। অবশ্য তাদের মধ্যে ২৯৫ জন ইতোমধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের গণটিকাদান কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পনির প্রস্তুতকৃত করোনা টিকার ৩০ কোটি ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে।
ফাইজার টিকা নেওয়ার পর মায়োকার্ডিটি বা পেরিকার্ডিটির মতো সমস্যা প্রথম দেখা গিয়েছিল ইসরায়েলে, চলতি বছর মার্চের দিকে। টিকাদান কর্মসূচিতে ফাইজারের টিকা ব্যবহার করেছে-এমন বেশ কয়েকটি দেশের স্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহ ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তাদের দেশেও একই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিডিসি (সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল)-এর সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করে এফডিএ। তারপরই শুক্রবারে এই বিবৃতি দেয় সংস্থাটি।
ফাইজার ও মডার্নার কতৃপক্ষের তরফ থেকে এ প্রসঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া আসেনি।