ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় কিউলেক্স মশার ঘনত্ব দ্রুত বাড়ছে উল্লেখ করে এক গবেষণা বলা হচ্ছে, গত বছরের জুন-জুলাইয়ের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে এসে মশার ঘনত্ব প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। জরুরি পদক্ষেপ না সেই সময়ে তুলনায় চলতি মার্চ মাসে মশার ঘনত্ব চারগুণ হবে বলেও গবেষণা প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।

গবেষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার জানান, মশা নিয়ে পুরো বছর জুড়েই গবেষণা চালানো হয় এবং গত দুই বছর ধরেই এটা চলছে। চলতি মাসেই সদ্য শেষ হওয়া জরিপের দেখা যায়, গত বছরের জুন-জুলাই মাসের তুলনায় বর্তমানে মশার ঘনত্ব দ্বিগুণ। আর যেভাবে এটা বাড়ছে, তা মার্চের মধ্যে চারগুণ হয়ে যাবে।

তবে ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব এবার অনেক কম উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, ‘কিউলেক্স মশার কারণে ডেঙ্গু হয় না, ফাইলেরিয়া হয়ে থাকে। আগে দেশের উত্তরবঙ্গে এ রোগ দেখা গেলেও রাজধানীতে এর নজির খুব একটা নেই। তারপরও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় গত ছয় মাসের মশার ঘনত্বের মাত্রা, তাপমাত্রা, আদ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি পর্যালোচনা করে মশার পূর্বাভাস মডেল করে দেখা গেছে, এটি মার্চে বর্তমান পরিস্থিতির দ্বিগুণ হবে (জুন-জুলাইয়ের চারগুণ)।

গবেষণার জন্য রাজধানী ঢাকার উত্তরা, গুলশান, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, কাঠাঁলবাগান এবং পুরান ঢাকার সদরঘাটকে বেছে নেওয়া হয়। সেখানে আরও দেখা যায়, ঢাকার চারদিকে নিচু অঞ্চলগুলোতে মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। কবিরুল বাশার বলেন, বর্তমান সসময়ে উপযুক্ত তাপমাত্রা এবং আদ্রতার সঙ্গে পানিতে অর্গানিক মেটার এর পরিমাণ বেশি থাকার কারণে মশার ঘনত্ব বাড়ছে। তাই পূর্ণাঙ্গ মশা এবং লার্ভা দমনে জরুরিভিত্তিতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম করে মশা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

এদিকে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরও।

অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুম আসতে আর বেশি দেরি নেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বর্ষাকাল ঘনিয়ে আসবে এবং তখন ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন শহরগুলোতে এডিশ মশার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আর মশার প্রাদুর্ভাব বাড়লে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের সংক্রমণের বিস্তার ঘটে। তাই ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার বিস্তার রোধ করতে হলে এখন থেকেই সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।