প্রবাসে অনেক বাংলাদেশির সাফল্যের তথ্য আমরা বিভিন্ন সময় শুনে থাকি। তাদের সফলতার গল্প বিভিন্ন মাধ্যমে জেনে থাকি। তেমনি তিন সফল বাংলাদেশির নাম স্থান পেয়েছে ‘সাকসেসফুল পিপলস ইন মালয়েশিয়া’ শীর্ষক বইয়ে।

এই তিন কৃতি বাংলাদেশি হলেন, প্রফেসর ড. এ.কে.এম. আহসানুল হক, প্রফেসর ড. আহমেদ জালাল খান চৌধুরী ও ড. মোহাম্মদ নাজমুল হাসান মাজিজ। যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশপিডিয়া প্রকাশিত ২০১৯ ও ২০২০ সালে মালয়েশিয়ার অন্যতম সফল ব্যক্তি হিসেবে তাদের ভূষিত করে।

তাদের জীবনী ‘সাকসেসফুল পিপলস ইন মালয়েশিয়া’ শীর্ষক বইটিতে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডা. মাহাথির মোহাম্মদসহ দেশটির অন্যান্য সফল ব্যক্তিদের নামও স্থান পেয়েছে। এ বইটির তালিকায় অন্যান্য সফল ব্যক্তিদের মধ্যে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী, অধ্যাপক, বিজ্ঞানী, শিল্পী, গভর্নর, ব্যবসায়ীদের নাম রয়েছে।

সফল ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার মানদণ্ডে যেসব বিষয় দেখা হয়েছে- তাদের অসামান্য একাডেমিক এবং নন-একাডেমিক কৃতিত্ব, সমাজ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের অবদান ইত্যাদি বিষয়। সাকসেসফুল পিপলস ইন মালয়েশিয়া বইয়ের প্রথম সংস্করণটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে, দ্বিতীয় সংস্করণটি ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এবং ৩য় সংস্করণ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয় এবং প্রতিটি সংস্করণে এ তিন বাংলাদেশির নাম স্থান করে নিয়েছেন।

‘সাকসেসফুল পিপলস ইন মালয়েশিয়া’ যদিও বইটি কেবল মালয়েশিয়ানদের জন্যই ছিল, তারপরও এ তিন বাংলাদেশির অসামান্য কীর্তি ও মালয়েশিয়ার সমাজ এবং বিশ্বজুড়ে তাদের অবদান ব্রিটিশপিডিয়াকে মুগ্ধ করেছে। তারা তাদের জীবনী সেই বইতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। প্রবাসে সফল ব্যক্তি হিসেবে তারা স্বীকৃত হওয়ায় এটি বাংলাদেশের জন্য গর্বের।

প্রফেসর ড. এ কে এম আহসানুল হক
প্রফেসর ড. এ. কে. এম আহসানুল হক ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে মার্কেটিংয়ের অধ্যাপক। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং থেকে ১৯৯১ সালে অনার্স (স্নাতক), ১৯৯৩ সালে মাস্টার্স ইন বিজনেস স্টাডিজ (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি প্রাপ্ত। ২০০১ সালের জানুয়ারিতে ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া (ইউপিএম) এর অধীনে গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট (এএসিএসবি) থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর একই বছর দেশটির মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটিতে মার্কেটিংয়ের প্রভাষক হিসেবে তার পেশাগত জীবন শুরু করেন। তিনি সৌদি আরবের কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। অধ্যাপক আহসানুল হক স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য (আনুমানিক ৩৫০) গবেষণাপত্র প্রকাশ এবং কনফারেন্স পেপার উপস্থাপন করেছেন।

তিনি পাঠ্যপুস্তক, গবেষণা বই, বইয়ের অধ্যায় এবং অধ্যয়নের মডিউলও প্রকাশ করেছেন। তিনি ওয়েব অব সাইন্স, স্কোপাস, ইমরাল্ড, এবিডিসি, এবিএস ইআরএ, ইনডেসাইন্স নিবন্ধিত জার্নালে এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আন্তর্জাতিক রেফারেড জার্নালে অসংখ্য গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সূচক জার্নালের সম্পাদকীয় প্রধান ও এডিটরিয়াল বোর্ডের সদস্য।

এ বাংলাদেশি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অসামান্য গবেষণা কাজের জন্য এমারল্ড লিটারেটি অ্যাওয়ার্ড এবং ব্রিটিশ পাবলিশিং হাউসসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর গবেষণার তত্ত্বাবধান করেছেন। প্রফেসর হকের তত্বাবধানে মোট ৩৯ জন পিএইডিপ্রাপ্ত হন, যাদের অনেকেই বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। ২০০২ সাল থেকে তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে অনেক গবেষণা অনুদানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

এছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংক, টেলিকম, জেড-কনসাল্টিংসহ বেশ কয়েকটি পরামর্শমূলক প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিজিটিং প্রফেসর এবং মূল্যায়নকারী (কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট) নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও সিম্পোজিয়ামে তিনি প্রধান বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছেন। আমেরিকান মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশন (এএমএ), চারট্যাডেড ইনস্টিটিউট অব মার্কেটিং (যুক্তরাজ্য), ইনস্টিটিউট অব মার্কেটিং মালয়েশিয়া, একাডেমি অব ওয়ার্ল্ড বিজনেস অ্যান্ড মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট, ওয়ার্ল্ড বিজনেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউবিআই), ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স সোসাইটি (আইএবিই) এবং আরও অনেক সোসাইটিসহ অসংখ্যা আন্তর্জাতিক সংস্থার আজীবন সদস্য ও বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত।

তিনি যুক্তরাজ্য এবং মালয়েশিয়ার চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব মার্কেটিং (সিআইএম) থেকে প্রফেশনাল চার্টার্ড মার্কেটার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিপণন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভোক্তা আচরণ, ইন্টারনেট মার্কেটিং, ইসলামিক মার্কেটিং এবং অন্যান্য মার্কেটিং ম্যানেজমেন্টসংশ্লিষ্ট গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

অধ্যাপক ড. আহমেদ জালাল খান চৌধুরী
অধ্যাপক ড. আহমেদ জালাল খান চৌধুরী ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের মৎস্য অনুষদ থেকে ফিশারিজ (অনার্স) স্নাতক সম্পন্ন করেন।

১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মৎস্য বিভাগে যোগদান করেন এবং পরে ১৯৮৭ সালে তার বিসিএস (মৎস্য) সম্পন্ন করেন। ইনস্টিটিউট অব অ্যাকুয়াকালচার, ইউনিভার্সিটি অব স্টার্লিং, স্কটল্যান্ড, ইউনাইটেড কিংডম থেকে স্নাতকোত্তর বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ (ফিশারিজ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং) সম্পূর্ণ করার জন্য ১৯৯২ সালে তিনি এফএও/ বিশ্বব্যাংক থেকে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক ফেলোশিপ লাভ করেন।

এ বাংলাদেশি যথাক্রমে ১৯৯৬ এবং ২০০০ সালে মালয়েশিয়ান সরকারি বৃত্তির অধীনে পুত্র মালয়েশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিশ ইকোলজি এবং অ্যাকুয়াকালচার বায়োটেকনোলজিতে এমএস এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। তিনি ২০২০ সালে ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মালয়েশিয়া থেকে হালাল এক্সিকিউটিভের পেশাদার সার্টিফিকেটও পেয়েছেন।

প্রফেসর ড. আহমেদ জালাল খান চৌধুরী বিজ্ঞান অনুষদ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া (আইআইইউএম) ২০০০ সালের নভেম্বর থেকে বিজ্ঞান অনুষদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিজ্ঞান অনুষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে একজন যিনি ২০০৩ সালে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বিভাগ বায়োটেকনোলজি (২০০১) এবং ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফি অ্যান্ড মেরিটাইম স্টাডিজ (ইনওসিইএম) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

২০০০ সালে একজন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন এবং ২০১১ সালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। বিজ্ঞান অনুষদে তার পেশাগত কর্মজীবনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন, ডেপুটি ডিন স্নাতকোত্তর এবং গবেষণা (২০০৯-২০১৬) প্রধান, ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফি মেরিটাইম স্টাডিজ (জানুয়ারি, ২০১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭), প্রধান, গবেষণা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (জানুয়ারি, ২০১৮ ডিসেম্বর) কুয়ানতান ক্যাম্পাস, প্রধান (আন্তর্জাতিকীকরণ এবং গ্লোবাল নেটওয়ার্ক, (১ জানুয়ারি, ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক স্টাফ প্রমোশন ক্রাইটেরিয়া ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি; বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা কমিটি; ইউনিভার্সিটি কাউন্সিল অব প্রফেসর কমিটি; বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা পর্যালোচনা কমিটি; বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা পরিচালনা কমিটি; বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকোত্তর ভর্তি কমিটি।

তিনি ২০১৪ সাল থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউট/বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলিক গবেষণা অনুদান প্রকল্প এবং অন্যান্য ফলিত গবেষণা অনুদান প্রকল্পের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করছেন। তিনি মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন প্রদর্শনীতে বৈজ্ঞানিক পণ্যের প্যানেল বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৫ সাল থেকে কাজাখস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে গবেষণা অনুদান প্রস্তাব অনুমোদন কমিটির প্যানেলিস্ট।

তিনি বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে একাধিকবার পুরস্কৃত হয়েছেন: সেরা লেকচারার ২০০৫; সেরা গবেষক ২০০৬; সেরা মানের গবেষণা ২০০৬; সেরা গবেষক ২০১৮; ২০১৯-২০২১ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শীর্ষ গবেষকদের একটি পুরস্কার। লাইব্রেরির পরিসংখ্যান টপ ভিউস পেপারস অনুসারে ২০১৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আইআইইউএম-এ শীর্ষ ভিউ জার্নাল তিনি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। ইসলামিক ইউনিভার্সিটি তার ১৫ বছরের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি বিজ্ঞান অনুষদের একজন একাডেমিক আইকন হিসেবে মনোনীত হন।

অ্যাকুয়াকালচারের ক্ষেত্রে তার গবেষণার আগ্রহ; মাছের বাস্তুশাস্ত্র; গ্রীষ্মমন্ডলীয় সামুদ্রিক এবং স্বাদু পানির জীববৈচিত্র এবং সংরক্ষণ এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক জার্নাল ১৫০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র, আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৪০টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র, আন্তর্জাতিক বই অধ্যায় এবং নিবন্ধের সংখ্যা ২০টি এবং ৪টি বই প্রকাশ করেছেন। তিনি ৬২টিরও বেশি স্নাতক এবং ১৫ স্নাতকোত্তর ছাত্র এবং ২ জন পোস্ট- ডক্টরাল ফেলো তত্ত্বাবধান করেছেন।

বর্তমানে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট, (আন্তর্জাতিক ওয়াটার, এয়ার, সয়েল কনভারসেশন সোসাইটি); স্থায়ী সদস্য, এশিয়ান ফিশারিজ সোসাইটি। এসব ছাড়াও তিনি মালয়েশিয়ান ফিশারিজ সোসাইটি; মালয়েশিয়ান নেচার সোসাইটি; সোসাইটি ফর কনজারভেশন বায়োলজি আমেরিকা; ব্রিটিশ ইকোলজিক্যাল সোসাইটির সদস্য।

তিনি ২০২০ সাল থেকে মর্যাদাপূর্ণ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (আইটিআই) থেকে অনারেবল ফেলো হিসেবে ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে জার্নাল সায়েন্স হেরিটেজের একজন প্রধান সম্পাদক এবং বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ সূচিযুক্ত জার্নালের (২০১৭-২০২৫) বোর্ড সদস্য। তিনি ৩০টিরও বেশি মর্যাদাপূর্ণ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সূচিযুক্ত জার্নালগুলোর সম্পাদকীয় বোর্ডের একজন পর্যালোচনাকারী সদস্য।

মর্যাদাপূর্ণ জার্নালগুলো হচ্ছে, অ্যাকুয়াকালচার রিভিউ, সৌদি জার্নাল অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্স, অ্যারাবিয়ান জার্নাল অব জিওসায়েন্স, এশিয়ান জার্নাল অব ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াটিক রিসার্চ, সায়েন্স মালয়েশিয়া, জার্নাল অব মালয়েশিয়ান মাইক্রোবায়োলজি, অ্যাপ্লাইড মাইক্রোবায়োলজি: জার্নাল অব পার্টিনিকা ট্রপিক্যাল এগ্রিকালচারাল সায়েন্স, এশিয়ান জার্নাল অব বায়োলজি, মালয়েশিয়া জার্নাল অব সায়েন্স, জার্নাল অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল।

তিনি তার ক্লাস্টার রিসার্চ গ্রুপের একজন প্রধান এবং সহযোগী সহ-গবেষক হিসেবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণা অনুদান (আনুমানিক: ১.৫ মিলিয়ন রিঙ্গিতের বেশি অনুদান) পেয়েছেন। তিনি মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গবেষণা প্রতিযোগিতা থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা পুরস্কার অর্জন করেছেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার অ্যাকুয়াকালচার এবং ফিশারিজ সেক্টরের ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবের ওপর মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে তিনি এশিয়া ও প্যাসিফিকের নেট অ্যাকুয়াকালচার সেন্টারের (এনএসিএ) মহাপরিচালকের অনুরোধে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন (২৪-২৫ নভেম্বর, ২০২০)।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, চীনের কৃষি ও গ্রামীণবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এশিয়া-প্যাসিফিক এক্সটেনশন সেন্টারে অ্যাকুয়াকালচার সেন্টারের নেটওয়ার্ক, চাইনিজ একাডেমি অব ফিশারি সায়েন্স কিংডাও, চীন ছাড়াও তিনি এশিয়ান ফিশারিজ এডুকেশন নেটওয়ার্ক (এশিয়ান-এফইএন) সিম্পোজিয়ামে (১০-১১ অক্টোবর, ২০২০) একজন আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে একটি বিশেষ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদের একজন পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রফেসর জালাল ও তার জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দর্শন (টিচিং ফিলোসফি টুয়ার্ডস বেসড ইকোনমি): ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সকল সদস্য দেশগুলোর জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে পরিকল্পিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাসটেইনবল ডেভেলপমেন্ট গোলের (এসডিজি) জন্য তার বর্তমান শিক্ষাদান এবং জ্ঞান শেখা এবং গবেষণা কার্যক্রমগুলি এসডিজি ৪ (কুয়ালিটি এডুকেশন), এসডিজি ১৪ ( লাইফ আন্ডার ওয়াটার) এবং এসডিজি ১৫ (লাইফ অন ল্যান্ড) দিকে নিবদ্ধন।

ড. নাজমুল
ড. নাজমুল একজন শিক্ষাবিদ সুপরিচিত একজন চিকিৎসা বিজ্ঞানী। ডাইরেক্টর অব বেসিক সাইন্সেস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ইন মাইক্রোবায়োলজি, ফেকাল্টি অব মেডিসিন, বায়োসাইন্স অ্যান্ড নার্সিং, মাশা ইউনিভার্সিটি, সওজানা পুত্রা কেম্পাস, সেলাংগর, মালয়েশিয়ায় কর্মরত।

তার গবেষণা সাধারণত ইনফেকশাস ডিজিজ অ্যান্ড পাবলিক হেলথের ওপর। মলিকুলার টেকনিক, মলিকুলার কারাক্টারাইজেশন, প্লাজমিড এবং ক্রোমোজোমাল ডিএনএ এক্সট্রাকশন, ইলেক্ট্রোফোরসিস, জেল পিউরিফিকেশন, পিসিআর, হাইব্রিডাইজেশনসহ ইত্যাদি বিষয়ে তিনি পারদর্শী।

তিনি মালয়েশিয়ার সরকার থেকে এক কোটিরও বেশি টাকা (অর্ধ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত) গবেষণার জন্য অনুদান পেয়েছেন। তিনি অনেক অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রকল্পের সুপারভাইজ করেছেন। ড. নাজমুলের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে ১০০টিরও বেশি গবেষণা আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আমন্ত্রিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারতসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অনেক গবেষণা নিবন্ধন উপস্থাপন করেছেন। তিনি বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেছেন।

ভাইরোলজি ও ইমিউনোলজিতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার কারণে তিনি কোভিডের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আর্টিকেল লিখেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। মালয়েশিয়ার জাতীয় টিভি চ্যানেল তাকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রচার করে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র থাকাকালীন কয়েক বছর ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টার-ভার্সিটি দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ইউনিভার্সিটি অব মালায়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও মালয়েশিয়ার স্নুকার, পুল এবং ক্যারাম প্রতিযোগিতায় অনেক পুরস্কার জিতেছেন।

সফল এ তিন বাংলাদেশি দেশের চিকিৎসা ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী। তারা বলছেন, আমাদের মোটেই সাফল্যের পেছনে দৌড়ানো উচিত নয়। আমাদের কেবল মনোযোগ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা দরকার। আমরা যদি এগুলো অনুসরণ করি তবেই জীবনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাফল্য আসবে।