দিনাজপুরের চিচিরবন্দরে মা-ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের সময় রংপুর জোনের সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার বাঁশেরহাট থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- রংপুর জোনের সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার কবির, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক।

জানা গেছে, চিরিরবন্দর থানার নান্দেড়াই গ্রামের লুংফর রহমানের বিরুদ্ধে ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তা ৫০ লাখ টাকার প্রতারণার মামলার আবেদন করেন। এ রকম অভিযোগের ভিত্তিতে ২৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় তোরা লুৎফরের বাড়ি যায়। তাকে না পেয়ে তারা তার স্ত্রী জহুরা ও ছেলে জাহাঙ্গীরকে কালো একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরে পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না দিলে তাদের মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানা পুলিশের স্মরণাপন্ন হয়। এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে আট লাখ টাকা নিয়ে চিচিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর বাজারে আসতে বলে। রানীরবন্দর বাজারে টাকা নিয়ে গেলে তাদের আবার কাহরোল থানার দশমাইল মোড়ে আসতে বলেন। তারা দশমাইল গেলে ফের সদর উপজেরার বাঁশেরহাট যেতে বলে। এর মধ্যে দিনাজপুর জেলা পুলিশ ও সিআইডি দিনাজপুর যৌথভাবে তাদের বাঁশেরহাট থেকে আটক করে।

আটকদের প্রথমে চিরিরবন্দর থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে দিনাজপুর এসপির সঙ্গে আলোচনা করে এসপি অফিসে নিয়ে যায়। তারা বর্তমানে দিনাজপুর পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।

চিচিরবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবো।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রংপুর জোনের সিআইডির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) আতাউর রহমান। তিনি বলেন, আটক তিনজনের মধ্যে একজন এএসপি, একজন এএসআই এবং একজন কনস্টেবল রয়েছেন। তাদের মধ্যে এএসআই ও কনস্টেবল ২১ আগস্ট থেকে দশ দিনের ছুটিতে ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সরকারি গাড়ি ব্যবহার না করে আমার অনুমতি ছাড়া ভাড়া করা একটি গাড়ি নিয়ে অপারেশনে যান তারা। আটক হওয়ার পর আমাকে জানানো হয়েছে। তারা যে আমাদের স্টাফ তা আমি জানিয়েছি। এর বাইরে কিছু জানি না।