যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি স্টেটে বুধবার রাত থেকে চলছে ক্যাটাগরি ওয়ান হ্যারিকেন আইডা ও পরবর্তী তাণ্ডব। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা ও টর্নেডোয় এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যাদুর্গত এলাকায় বহু মানুষ এখনও আটকা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। পানিতে ভেসে যাওয়া গাড়ির ভেতর থেকেও মরদেহ উদ্ধার করার কথা জানা গেছে।
কেবল নিউ জার্সিতেই মারা গেছে অন্তত ২৩ জন। এছাড়া নিউইয়র্ক, পেনসিলভ্যানিয়াতেও অনেক লোক প্রাণ হারিয়েছেন।
নিউ জার্সির গভর্নর ফিল মারফি বলেছেন, বেশিরভাগই মারা গেছেন তাদের গাড়ি বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া বা পানিতে গাড়ি ভেসে যাওয়ার কারণে।
আইদায় বিধ্বস্ত ওই তিন রাজ্য থেকে ভয়াবহ কিছু দৃশ্য ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। অবিরাম বৃষ্টিপাত এবং তুমুল ঝড়ের জেরে লণ্ডভণ্ড জনজীবন। রাস্তাঘাটে যাতায়াত বন্ধ হলেও বুধবার পর্যন্ত চালু ছিল সাবওয়ে। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে স্টেশনগুলোতেও পানি ঢুকতে শুরু করে।
বাধ্য হয়ে মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটি নিউইয়র্ক শহরে সাবওয়ে সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। নিউইয়র্কের সাবওয়েতে অন্তত ১৭টি ট্রেন আটকে পড়েছে। উদ্ধারকাজ চলছে।
নিউইয়র্কে আগেই জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। এবার নিউ জার্সির ২১টি কাউন্টিতেও জরুরি অবস্থা জারি করেছেন অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর ফিল মারফি।
এর আগে প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় নিউইয়র্ক এবং তার পার্শ্ববর্তী নিউজার্সিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার এনবিসি নিউজের প্রতিবেদেন বলা হয়, নিউইয়র্কে একটি বেসমেন্টে আটকা পড়ে ৪ জন মারা গেছেন। ঝড় থেকে বাঁচার জন্য সেই বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা, তারপর আর বের হতে পারেননি। বন্যার পানি বেসমেন্টে ঢোকায় মৃত্যু হয় তাদের।
হ্যারিকেন আইদার প্রভাবে স্থানীয় সময় বুধবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টি হয় নিউইয়র্ক সিটি এবং নিউজার্সি এলাকায়। ভারী বর্ষণের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ এবং রেল ও পাতাল রেল সেবা স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সির কর্তৃপক্ষ।
বুধবার রাত থেকে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিতে প্রবল বর্ষণ হলেও এরই মধ্যে একটি টর্নেডোও আঘাত হেনেছে নিউইয়র্কে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ধারবাহিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ইতপূর্বে ঘটার কোনো রেকর্ড নেই।
যদিও বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের আকাশে ছিল ঝলমলে রোদ, কিন্তু এখনো উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কারন অনেক গাড়ি ভেসে গেছে হড়কা বানের পানিতে। সেসব গাড়ি থেকে মরদেও ও পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।