যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি স্টেট  ও কানাডার অন্টারিও প্রদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র ও বড় আকারের তুষারঝড়ে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন অন্তত ৮ কোটি মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মানুষ বর্তমানে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর ইউএস ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের (এনডব্লিউএস) বরাত দিয়ে সোমবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের দিন রোববার থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো হাওয়া ও তুষারঝড়ে ১ ফুটের বেশি পুরু তুষারের স্তরে ঢেকে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা ও নিউইয়র্ক ও কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের বেশ কিছু স্থান।

এদিকে, তীব্র ঠাণ্ডা ও তুষারপাতের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এই ৭ অঙ্গরাজ্যে ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে এসব অঙ্গরাজ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আছেন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায়।

এই আবহাওয়ায় উপদ্রুত অঙ্গরাজ্যগুলোর বাসিন্দাদের জন্য বাড়ির বাইরে বের হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে- সতর্কবার্তা দিয়ে এনডব্লিউএসের সোমবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় এই সাত অঙ্গরাজ্যে বেশ কিছু সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঝড় তুষারপাতের কারণে গাছপালা ভেঙে পড়াসহ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন এলাকার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে- উল্লেখ করে বুলেটিনে আরও বলা হয়, ঝড়ের কারণে নিউইয়র্ক ও কানেকটিকাট রাজ্যের উপকূলীয় এলাগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দেওয়ারও সম্ভাবনা আছে।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোববার থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারেরও বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। জর্জিয়া স্টেটের গভর্ণর ব্রায়ান কেম্প বিবিসিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা যত ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলাম, এখন পর্যন্ত তা হয়নি- এটি একটি বড় স্বান্তনা; তবে আবহাওয়ার অবস্থা খুবই বাজে। যে কোনো সময় পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার শঙ্কা আছে।’

ফেডারেল সরকার ইতোমধ্যে উপদ্রুত অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ব্রায়ান কেম্প।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সীমান্তঘেঁষা কানাডার অন্টারিও প্রদেশেও ঝড় ও ব্যাপক তুষারপাত শুরু হয়েছে। প্রাদেশিক রাজধানী ও কানাডার বৃহত্তম শহর টরন্টো গত ২৪ ঘণ্টার তুষারপাতে ৭ ইঞ্চি পুরু তুষারের স্তরে ঢেকে গেছে বলে জানিয়েছে কানাডার আবহাওয়া দফতর।