জীবনে বহু মানুষ ভালোবেসে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে প্রেমকে নিজের জীবন থেকে দূরেই রেখেছিলেন কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। বিয়ে করেননি, হয়নি সেই অর্থে ঘর-সংসার।

তবে কেন তার এই বিপরীত মেরুতে অবস্থান, এসব কিছুর জবাব লতা নিজেই দিয়েছিলেন।

এক সাক্ষাৎকারে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মনের ঝাঁপি খুলেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। বলেন, ‘একমাত্র আমার মা বিয়ে নিয়ে জোরাজুরি করতেন, একসময় তিনিও হাল ছেড়ে দেন। আমার কাছে পরিবার বিয়ের চেয়ে বেশি জরুরি ছিল। কিন্তু এমনটা অস্বীকার করবো না যে আমাকে কোনও দিন একাকিত্ব ঘিরে ধরেনি, তাহলে তো আমি মানুষই হতাম না। বিবাহিত হোন কিংবা সিঙ্গেল, একাকিত্ব সবার জীবনে আছে। কখনও কখনও এই একাকিত্ব ক্ষতিকারক হয়। তবে বলবো, আমি খুব সৌভাগ্যবান যে ভালোবাসার মানুষরা আমার আশপাশে সবসময় থেকেছে।’

লতা মঙ্গেশকর কোনও দিন প্রেমে পড়েননি- এ প্রশ্নও এসেছিল সেই সাক্ষাৎকারে। লতা মৃদু হেসে বলেন, ‘হ্যাঁ, পড়েছে তো, তবে শুধু নিজের কাজের সঙ্গে। আর আমি ভালোবেসেছি আমার আপনজনদের, পরিবারকে, আর কাউকে নয়।’

পরিবারের জন্যই আজীবন সিঙ্গেল থেকেছেন লতা মঙ্গেশকর। নিজের সংসার পাতেননি।

১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর লতার জন্ম এক মারাঠি পরিবারে। বাবার হাত ধরেই গান ও অভিনয়ের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। ১৩-১৪ বছরে প্রথম গান গেয়েছিলেন মারাঠি ছবিতে। হিন্দিতে প্রথম প্লেব্যাক করেন ‘মজবুর’ সিনেমা দিয়ে। লতার সুরেলা কণ্ঠ সিনেমা ও গানে প্রাণ ঢেলে দিতো। নক্ষত্রপতনে তাই শোকস্তব্ধ দুনিয়া।

২৭ দিন ধরে করোনা, চলেছে নিউমোনিয়ার সঙ্গে লড়াই। ৯ জানুয়ারি লতার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছিল লতার। ৩০ জানুয়ারি তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ভেন্টিলেশন থেকে বের করেও নিয়ে আসা হয় সুরসম্রাজ্ঞীকে। এরপর আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা ১২ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেলেন লতা মঙ্গেশকর।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস