রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের। রবিবার সন্ধ্যায় শিবাজি পার্কে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এদিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে ভারতের মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
শিবাজি পার্কে ভারতরত্নকে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের মতো বিশিষ্ট রাজনীতিবিদরা। শাহরুখ খান, শচীন টেন্ডুলকার, আমির খান, রণবীর কাপুর, জাভেদ আখতার, শ্রদ্ধা কাপুরদের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন গুণীজনরাও।
প্রায় চার সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন লতা মঙ্গেশকর। করোনাভাইরাসের পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এই কিংবদন্তি। জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ থেকে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল। বন্ধ রাখা হয়েছিল লাইফ সাপোর্ট। আশার আলো দেখছিলেন চিকিৎসকরাও। তবে শনিবার সকালে শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা তখন জানিয়েছিলেন, লতা মঙ্গেশকরের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। এরপর বোন লতাকে দেখতে হাসপাতালে যান আরেক কিংবদন্তি আশা ভোঁসলে ও পরিবারের বাকি সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত রবিবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। করেনাভাইরাসের বিধি-নিষেধ মেনেই এদিন সন্ধ্যায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
ভারতীয় এই কিংবদিন্তির মৃত্যুতে সোমবার রাজ্যে অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৫ দিন ধরে রাজ্যে বাজানো হবে লতার গান। এভাবেই শিল্পের মাধ্যমে শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন গুণীজনরা।
ভারতের ইন্দোরের ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ‘মজবুর’ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে প্লেব্যাকে হাতেখড়ি হয় তার। ক্যারিয়ারে লতা মঙ্গেশকর ৩৬টি ভাষায় প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। ১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুকে স্থান পান তিনি।
পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা, পদ্মবিভূষণ, এনটিআর জাতীয় পুরস্কার এবং ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ভারতরত্ন পেয়েছেন তিনি। এছাড়া ফ্রান্সের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অফিসার দে লা দি’ অনারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই কিংবদন্তি।