করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত বছর জারি করা কঠোর লকডাউনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে স্পেনের শীর্ষ আদালত। এই আদেশের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জরিমানার শিকার হওয়ার মানুষেরা তাদের পরিশোধকৃত অর্থ ফেরত পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। তবে আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, লকডাউনের কারণে অর্থ হারানোয় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকে অনুমোদন দেওয়া হবে না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঢেউ মোকাবিলা করতে ২০২০ সালের ১৪ মার্চ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে স্পেন সরকার। ওই সময়ে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছিলো আর হাসপাতালগুলো দ্রুত রোগীতে পূর্ণ হয়ে উঠছিলো। তখন থেকে স্পেনের প্রায় ৮১ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
স্পেনে তিন ধরনের জরুরি অবস্থা রয়েছে: স্টেট অব ইমার্জেন্সি, স্টেট অব এক্সসেপশন আর সর্বোচ্চ পর্যায় স্টেট অব সিজ। জরুরি অবস্থার নিয়ম অনুযায়ী দেশের সব মানুষকেই ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় আর কেবল জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি মেলে। জরুরি বাণিজ্য ছাড়া সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ থাকে।
২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ওই আইন কার্যকর থাকে। যদিও ওই বছরের পরের দিকে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়। তবে স্পেনের সাংবিধানিক আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, স্টেট অব ইমার্জেন্সির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাকে যথেষ্ট পরিমাণ সমর্থন করে না সংবিধান। এর কারণ হলো এসব নিয়ম মানুষের মৌলিক অধিকার দমনের সমান।
আদালত বলেছে, বছরের পরের দিকে যেভাবে মানুষের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়েছে তা বৈধ। আদালত আরও বলেছে, সরকারের উচিত ছিলো স্টেট অব ইমার্জেন্সির বদলে স্টেট অব এক্সসেপশন ঘোষণা করা।
ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ভক্স এর দায়ের করা এক মামলার জেরে এসব আদেশ দিয়েছে স্পেনের আদালত।