আগামীকাল দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। ঈদের আনন্দ উদযাপন করার জন্য শেকড়ের ঠিকানায় ফিরছে মানুষ।সড়ক, নৌ ও রেলপথ সবখানেই যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলি বাসস্ট্যান্ডে ভয়াবহ যানজট ও শিডিউলবিপর্যয়ে ভোগান্তিতে পড়েন উত্তরবঙ্গগামী ঘরমুখো মানুষ। সময়মতো ট্রেন ছেড়ে যাওয়ায় স্বস্তি জানিয়েছেন যাত্রীরা। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ছিলো চিরচেনা ভিড়।
তবে গত কয়েকদিন স্বস্তির ঈদযাত্রা হলেও আনন্দের এই ঈদযাত্রায় ভোগান্তির কারণে হয়ে দাঁড়িয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বুধবার (২৮ জুন) ভোর থেকেই থেকে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই টার্মিনালগুলোতে ভিড় করছে ঘরমুখো মানুষ। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত সময়ে বাস না ছাড়া এবং রাজধানী ছাড়ার মুখগুলোতে যানজট ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তো আছেই।
সিরাজগঞ্জের যাত্রী মেশকাত বলছেন, যানজট এড়াতে ভোরেই টার্মিনালে চলে এসেছি। কিন্তু সাত ঘণ্টা হলো বাসে উঠে বসে আছি। অথচ, এখনও বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে পারেননি। এতো রাস্তাঘাট হলো, কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ কমল না।
মোজ্জামেল নামে আরেক যাত্রী বলছেন, বৃষ্টির কারণে পরিবার নিয়ে সায়দাবাদ পর্যন্ত আসতে খুব কষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে, নারী, শিশু ও জিনিসপত্র থাকায় বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তারমধ্যে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।
বগুড়ার যাত্রী নাদিয়া বলছে, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে স্বামী ও দুই সন্তানসহ গাবতলী এসেছি। সবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতেই বাড়ি যাচ্ছি। সবাই মিলেমিশে ঈদ করব, এই খুশিতে বৃষ্টি, যানজটেও ভোগান্তি মনে হচ্ছে না।
এদিকে ট্রেন ও লঞ্চেও যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে যাত্রীরা ছুঁটছেন রেল স্টেশন ও সদরঘাটে। তবে, যাত্রীদের চাপ থাকলেও এখনও বড় ধরনের কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি। লঞ্চ যাত্রীরাও অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে ঢাকা ছাড়ছেন।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে থেকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে পুলিশের সব ইউনিট ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথে ও পশুর হাটে ছিনতাই, মলম ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা যাতে কোনো ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম করতে না পারে সেজন্যও পুলিশ কাজ করছে। এ ধরনের নাশকতামূলক কাজ করলে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।
নগরবাসীর উদ্দেশে পুলিশ প্রধান বলেন, ঈদের ছুটিতে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার সময় মূল্যবান মালামাল নিরাপদ হেফাজতে রেখে যাবেন। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে ভ্রমণ করবেন না। ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করবেন না।